নির্বাচনী কাজে আসা আসা দুই সিআরপিএফ জওয়ানের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু, ভোটের আগের দিনও ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, মাওবাদী ও সাত জঙ্গিদলের ভোট বয়কটের হুমকি ইত্যাদিকে সঙ্গে নিয়েই আগামী কাল শুরু হচ্ছে মণিপুরের ভোটপর্ব। প্রার্থীর সংখ্যা ২৭৯। এই প্রথম ১৬ জন মহিলা প্রার্থী নির্বাচনে লড়বেন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার পি সি লামকুংগা জানান, রাজ্যে মোট ভোটার ১৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৮১৩ জন। বুথের সংখ্যা ২৩২৫। এরমধ্যে প্রায় ৩০০টি স্পর্শকাতর ও আড়াইশোটি অতি-স্পর্শকাতর বুথ। সেগুলিতে সিসিটিভি থাকবে। ভোট পর্ব লাইভ দেখাবারও চেষ্টা চলছে। গণনা হবে ৪ মার্চ। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এই প্রথম প্রতি বুথে ক্যামেরা রাখা হচ্ছে। ছাপ্পা ভোট, ভুয়ো ভোট, ভুতুড়ে ভোটারের অভিযোগ এড়াতে ভোট দেওয়ার সময় সব ভোটারকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হবে। আগামী কাল সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৩টে অবধি চলবে ভোট গ্রহণ।
এরমধ্যেই উখরুল জেলার চাসাদে সিআরপিএফ-এর এক হেড কনস্টেবল ও কনস্টেবলকে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। পুলিশের সন্দেহ, স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি ঘটনার নিন্দা করে বলেন, “এই ভাবে ভোট বানচাল করা যাবে না। ৬০ টি কেন্দ্রেই নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়েছে।” এর মধ্যেই আজ সকাল ১১টা নাগাদ, পশ্চিম ইম্ফলের থংমেইবাঁধ এলাকায় এমপিপি প্রার্থী চন্দ্রমণি সিংহের বাড়ির বাইরে বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। পুলিশ জানায়, তাঁর বাড়ির বাইরে একটি সাধারণ শৌচাগার রয়েছে। আজ সকালে এক যুবক ওই শৌচালয়ের সামনে নামে। ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় সে। অল্পপরেই বিস্ফোরণ। ভেঙে যায় শৌচাগার ও লাগোয়া দেওয়াল, দরজা-জানলা। জখম অবস্থায় ভিতরে থাকা যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, জখম ব্যক্তি বোমা রাখতে গিয়ে নিজেই জখম হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার জানান, ২০০৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৮২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এ বার কমিশন ভোটদানের হার বাড়াতে বদ্ধপরিকর। জঙ্গি হুমকির জবাবে পথনাটিকা, তারকাদের দিয়ে ভোটদানের সপক্ষে প্রচারও চালানো হয়েছে। পার্বত্য মণিপুরে বহু দুর্গম গ্রামের ক্ষেত্রে এতদিন অবধি গ্রামের মনোনীত দু-তিন জন যুবক বহু চড়াই-উতরাই উজিয়ে বুথে আসতেন। গ্রামবাসীদের ইচ্ছানুযায়ী প্রার্থীকে তাঁরাই ভোট দিয়ে যেতেন। এ বার ছবি তোলার ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সেই প্রথাও বন্ধ। |