মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। আর তাতেই চিড় প্রোটোকলের চিরাচরিত ধারায়। বৃহস্পতিবার সকালে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছনোর আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। প্রোটোকল অনুযায়ী যা বাঞ্ছনীয় নয়।
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। ঘড়ির কাঁটা ধরে ঠিকঠাক করা ছিল সবকিছু। যেমন, মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছবেন সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে। রাজ্যপাল তার এক মিনিট পরে ৯টা ৫৬তে। ৯টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে রাজ্যপাল ঠিক ১০টা থেকে কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ শুরু করবেন। বর্তমান রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন এর আগেও রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই অনুষ্ঠানে এবারই প্রথম উপস্থিতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যথাসময়ে তাঁর কনভয় অনুষ্ঠানস্থলের কাছে পৌঁছেও যায়। তবে তাঁর স্যান্ট্রো গাড়ি ‘স্যালুটিং বেস’ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই হঠাৎ মেয়ো রোড সংযোগস্থল পেরিয়ে রেড রোডে ঢুকে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মমতা। কুচকাওয়াজ দেখতে আসা জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে হাঁটতে শুরু করেন ‘বেস’-এর দিকে। ততক্ষণে ওই রাস্তায় চলে এসেছে রাজ্যপালের কনভয়। হাঁটতে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকে পিছনে ফেলেই রাজ্যপালের গাড়ি নিমেষে পৌঁছে যায় ‘বেস’-এ। মুখ্যমন্ত্রী হেঁটে যখন সেখানে আসেন, রাজ্যপাল তখন পতাকা উত্তোলনের জন্য পায়ে পায়ে এগোতে শুরু করেছেন। |
প্রোটোকল অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল কোনও অনুষ্ঠানে থাকলে তাঁদের উপস্থিতির আগেই অন্য সকলকে পৌঁছে যেতে হয়। তাঁরা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে যাওয়ার আগে কারও চলে যাওয়াও বাঞ্ছনীয় নয়। সেদিক থেকে প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো এক সরকারি অনুষ্ঠানে এই ঘটনা অনেকেরই নজর কেড়েছে। কিছুদিন আগেও টাউন হলে রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশের একটি অনুষ্ঠানে মহাকরণ থেকে দেরিতে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর জন্য খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল রাজ্যপালকে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার মধ্যে কিন্তু কোনওরকম ‘ইঙ্গিত’ খোঁজার জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল। তাঁদের বক্তব্য, মমতা স্বভাবসিদ্ধভাবেই মানুষের কাছাকাছি যেতে ভালবাসেন। গাড়ি থেকে নেমে জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে এগোনোর কারণও সেটাই। |