শহরের সূর্যসমিতির থিম ঘাসের মধ্যে জগৎ। মণ্ডপের মধ্যে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে সবুজ ঘাস। স্থানীয় এক শিল্পী হাতের নৈপুণ্যে সেখানে কোথাও পিঁপড়ে, কোথাও আবার ফড়িং। কোথাও বা আবার উড়ে বেড়াচ্ছে প্রজাপতির দল। ঘাসের জগৎ আকর্ষণীয় করে তুলতে শ্যামরায় পাড়ার এই মণ্ডপে একে একে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ব্যাঙের ছাতা, মাকড়সার জাল। উদ্যোক্তাদের দাবি, ঘাস সবাই চলে পায়ে দলে। তবে তার মধ্যেও রয়েছে এক অনাবিল সৌন্দর্য। দর্শকদের তা দেখাতেই এমন উদ্যোগ। এখানকার পুজো এ বারপা দিল ২৯ বছরে।
|
চার দিকে হঠাৎ করেই নেমে এল অন্ধকার। এর পরে সজোরে কম্পন। আর ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে বাড়ি-ঘর। জলাশয়ের মধ্যে উথালপাথাল করছে জল। আচমকা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। রেহাই পায়নি অন্য জীবজন্তুরাও। দুর্যোগ শেষে শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালে। উদ্ধার কাজে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে সেনা বাহিনী। আলো ও শব্দের মাধ্যমে ভূমিকম্পের এই থিম সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে তুলে ধরেছে বড় মিত্র পাড়ার নিউ ভারতমাতা ক্লাব। শুক্রবার উদ্বোধন পর্ব সারলেন উদ্যোক্তারা।
|
প্রায় ১৫ হাজার মাটির সরা আর টব দিয়ে হয়েছে মন্দির। কাল্পনিক এই মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়ে উঠেছে বড়মিত্র পাড়ার বিধান স্মৃতি সঙ্ঘে। প্রবেশ দ্বার, পাঁচিল-সহ নানা অংশে টেরাকোটার কাজ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মণ্ডপটির কারুকার্য এতটাই নিখুঁত, আচমকা কেউ শহরে এলে মনে করতেই পারেন, মন্দিরটি আসল। ক্লাব কর্তাদের দাবি, শুরু থেকেই ভিড় উপচে পড়বে এই মণ্ডপে।
|
শীতের সকাল আর এক কাপ চা। এই যোগাযোগ অনস্বীকার্য। শহরের শ্যামগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপ তাই এক কাপ চায়ের আদলে। মণ্ডপের ভিতরেও রয়েছে নানা কারুকাজ। বাগদেবীর মূর্তি এখানে তৈরি হয়েছে নেপালি তরুণীর আদলে। মূর্তির চার পাশে তৈরি করা হয়েছে চায়ের বাগান। সেখানে তরুণীর দল ব্যস্ত চা-পাতা তুলতে। স্থানীয় শিল্পী রবিউল ইসলাম এখানে মণ্ডপসজ্জার কাজ করেছেন।
|
শহর-ঘেঁষা রংপাড়া সমাপ্তি সঙ্ঘ বরাবরই তৈরি করে উপকরণের প্রতিমা। এ বার এই ক্লাবের প্রতিমা তৈরি হয়েছে কাজু বাদাম, কিসমিস, আমসত্ত্ব আর চেরি দিয়ে। প্রায় সাড়ে তিন ফুটের এই প্রতিমা তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রবীর বারুই এবং বিশ্বজিৎ সরকার নামে দুই যুবক। তাঁদের কাছ থেকেই জানা গেল, প্রতিমা গড়তে লেগেছে প্রায় চার কেজি কাজু, দেড় কেজি কিসমিস, ১ কিলো আমসত্ত্ব আর ৫০০ গ্রাম চেরি। শিল্পীরা জানালেন, প্রতিমা তৈরি করতে একমাত্র বাধা পিঁপড়ের দল। উপকরণের পাশাপাশি এই ক্লাবের আলোকসজ্জা এ বার শান্তিপুরের।
|
অন্য ক্লাবগুলি যখন আড়ম্বরের সঙ্গে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করল, তখন একটু অন্য রকম ভাবেই দিন শুরু করল যুবশক্তি ক্লাব। শুক্রবার সকালে ক্লাব-সদস্যদের উদ্যোগে আয়োজন করা হল বসে আঁকো, প্রবন্ধ আর পোস্টার প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের জন্যই ছিল ব্যবস্থা। বিকেলে ছিল ক্যুইজের আসর, সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এখানকার প্রতিমা এ বার মাটির সাজের তৈরি।
|
সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে শিব পুরাণের কাহিনি তুলে ধরল পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার ইউনাইটেড ক্লাব। মণ্ডপের ভিতরে একটি নাটমন্দির। ভিতর ও বাইরের দেওয়ালে সুপারি, নারকেল ও খেজুর গাছের ছাল-সহ নানা অংশ দিয়ে সাজানো হয়েছে ওই সব দৃশ্য। নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি একটি ঝাড়বাতিও রাখা হয়েছে মণ্ডপে। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি হয়েছে এখানকার মূর্তিও।
|
শহরের রূপালিকা ক্লাব তাদের মণ্ডপে তুলে আনল আমরি কাণ্ড। মণ্ডপের ভিতরে হয়েছে থার্মোকলের কাজ। সেই কাজেই ফুটে উঠেছে হাসপাতালে আগুন লাগা, দমকল বাহিনীর আগুন নেভানো, ভিতর থেকে রোগীদের উদ্ধার করা-সহ নানা দৃশ্য। এখানে মণ্ডপ-সজ্জার কাজ করেছে স্থানীয় শিল্পী রাজু দাস।
|
তথ্য: কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |