কয়লা চুরির অভিযোগে ধৃত ৬, ক্ষোভ তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ |
অবৈধ কয়লা কারবারে জড়িত সন্দেহে রানিগঞ্জে ৬ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের ধরা হয়। ধৃতেরা তাঁদের কর্মী-সমর্থক দাবি করে রানিগঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সেনাপতি মণ্ডলের অভিযোগ, “সিপিএমের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বেছে বেছে আমাদের লোকজনকে ধরেছে পুলিশ।” পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসানসোলের এডিসিপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুক্রবার ভোরে অভিযান চালানো হয় রানিগঞ্জে। পুরনো এগারার কলপাড়া থেকে পাঁচ জন ও শিবমন্দির পাড়া থেকে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের পরে সকালে ব্লক তৃণমূল সভাপতি সেনাপতিবাবুর বাড়ির সামনে জড়ো হন ধৃতদের পড়শি ও পরিজনেরা। তাঁরা দাবি করেন, ধৃতেরা নির্দোষ। বিনা কারণে তাঁদের ধরে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও তাঁদের অভিযোগ, অভিযানের সময়ে পুলিশ কয়েকটি বাড়ির দরজা ও জানালা ভেঙেছে।
সেনাপতিবাবু জানান, পুলিশ যাঁদের ধরেছে তাঁরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। তাঁর দাবি, “ধৃতেরা কেউই কয়লা চুরিতে যুক্ত নন। অশোক বাউরিকে যে প্যাচে কয়লা চুরির অভিযোগে ধরা হয়েছে, তিনি সেখানকারই নিরপত্তা কর্মী। প্রকাশ বাউরি যুব তৃণমূলের পুরনো এগারা ইউনিটের সভাপতি। অন্য চার জনও নানা পেশায় যুক্ত।” সেনাপতিবাবুর অভিযোগ, “দিনের বেলায় পুলিশের সামনেই ডাম্পার থেকে কয়লা চুরি করছে দুষ্কৃতীরা। তা সত্ত্বেও কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। উল্টে, রাতের অন্ধকারে আমাদের কর্মীদের ধরে নিয়ে গেল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল করতেই সিপিএমের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পুলিশ এমন করছে।” তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তাপসবাবু বলেন, “ঘটনার কথা আমি শুনেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
কয়লা চোরেদের দৌরাত্মে রানিগঞ্জের নারায়ণকুড়ি প্যাচে কাজ ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে কিছু দিন আগেই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের কাছেও। এডিসিপি ভাস্করবাবু জানান, কয়লা লুঠ, চুরি এবং পাচারের অভিযোগে বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। যারা এই কয়লা চুরিতে জড়িত রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ, তাদের ধরতে অভিযান চলছে। এমন অভিযানেই ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান এডিসিপি। অভিযানের সময়ে পুলিশি হেনস্থার কথা তিনি মানতে চাননি। রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। সিপিএমের রানিগঞ্জ জোনাল সম্পাদক রুনু দত্ত বলেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। তৃণমূলের ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।” |