কার জমিতে আবাসন, অসঙ্গতি মেয়র ও চেয়ারম্যানের বক্তব্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
এক জন দাবি করছেন, যে জমিতে নির্মাণ হচ্ছে তা স্থানীয় এক ব্যক্তির। তিনি নিঃশর্তে জমি দান করতে চান পুরসভাকে। অন্য জন ইসিএলকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, ওই জমি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের দখলে ছিল। তাঁদের অনুমতি নিয়েই সেখানে বাড়ি গড়ার কাজ হয়েছে। আসানসোল পুরসভার মেয়র ও চেয়ারম্যান, দু’জনেরই দাবি, তিনিই ঠিক বলছেন। দু’জনের এমন আলাদা বক্তব্যে ফের বিএসইউপি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে আসানসোলে।
আসানসোল পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ডামরা এলাকায় গরিবদের জন্য বিএসইউপি প্রকল্পে বেশ কিছু বাড়ি তৈরি করছে পুরসভা। ইসিএল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই আবাসন গড়া হচ্ছে তাঁদের জমি দখল করে। আসানসোল দক্ষিণ থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগও দায়ের করেছেন তাঁরা। রাজ্য সরকারের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের লোকাল অডিট দফতরও পুরসভার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে। |
এই বেনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সম্প্রতি পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলররা মেয়রের কাছে বিষয়টি জানতে চান। মেয়র বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যে জায়গায় আবাসনগুলি হচ্ছে সেটি স্থানীয় এক ব্যক্তির। তিনি পুরসভাকে নিঃশর্তে জমি দিতে চান। আমরা কিছু দিনের মধ্যেই কাগজপত্র পুরসভায় আনিয়ে নেব।” দিন কয়েক আগে পর্যন্ত একই কথা বলে আসছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। কিন্তু গত ১৯ জানুয়ারি ইসিএল কর্তৃপক্ষকে লেখা একটি চিঠিতে জিতেন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, ডামরায় যেখানে আবাসন তৈরি নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ তুলেছেন, সেই জমিগুলি এলাকার গরিব আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের দখলে রয়েছে। আবাসন নির্মাণের আগে সেই সব লোকজনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে জমির মালিকানা ওই আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজনের আছে কি না, তা স্পষ্ট করে জানাননি জিতেন্দ্রবাবু।
পাশাপাশি, জিতেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “ইসিএলের জমি দখল করে সিপিএম একাধিক দলীয় কার্যালয় গড়েছে। সে ক্ষেত্রে ইসিএল কর্তৃপক্ষ কোনও অভিযোগ করেননি। অথচ গরিবদের বাড়ি নির্মাণের মতো উদ্যোগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে ইসিএল।” ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য জানান, তাঁদের সংস্থার জমিতে অবৈধ নির্মাণের বিষয় নজরে এলেই তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের দাবি, ইসিএলের জমি দখল করে তাঁরা কোনও দলীয় কার্যালয় তৈরি করেননি।
এ দিকে, পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলরদের অভিযোগ, মেয়র ও চেয়ারম্যানের দু’রকম বক্তব্যে তাঁরা ধন্দে। কে ঠিক বলছেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। দলের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক তথা মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলামের অভিযোগ, “কেন্দ্রের টাকায় বেনিয়ম হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি পাঠাচ্ছি।” |