গাফিলতি, সুপার তালাবন্দি করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
অন্য কোনও চিকিৎসককে দায়িত্ব না দিয়েই ছুটিতে চলে গিয়েছিলেন হাসপাতালের সুপার। তাঁর গাফিলতিতেই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা শিকেয় উঠেছে। এমনই বেশ কিছু অভিযোগ তুলে বুধবার করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার বিধুভূষণ মাহাতোকে নিজের অফিসে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখালেন করিমপুরের নাগরিক কমিটির লোকজন। বিকেলে পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা হাসপাতাল সুপার ও নাগরিক কমিটির লোকজনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এর পরে বিক্ষোভ উঠে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার করিমপুরের হরিপুর মাঠে কন্যাযাত্রীদের একটি বাসের সঙ্গে সব্জি বোঝাই একটি লরির ধাক্কায় ৩৫ জন যাত্রী জখম হয়েছিলেন। প্রথমে তাঁদের সকলকেই ভর্তি করা হয় করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। এ রকম জরুরি অবস্থায় প্রায় সমস্ত চিকিৎসকই চলে আসেন হাসপাতালে। সেই সময় সুপারের খোঁজ করলে জানা যায় যে তিনি সেদিনই ছুটিতে চলে গিয়েছেন। অথচ হাসপাতালের অন্য কোনও চিকিৎসককেও তিনি লিখিত ভাবে দায়িত্ব দিয়েও যাননি। |
নাগরিক কমিটির পক্ষে মিঠু অধিকারী বলেন, ‘‘সুপারের চরম গাফিলতির কারণেই করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের কোনও উন্নতি হচ্ছে না। সুপার নিজের খেয়াল খুশিমত কাজ করে চলেছেন। নিজের ইচ্ছেমত ছুটিতে বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। অথচ কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন না। এ দিকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে চরম হয়রান হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আমরা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে হাসপাতালের এই সমস্ত বিষয়গুলো জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যভবনকে লিখিত ভাবে জানাচ্ছি।’’
করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ লেগেই রয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আহত এক স্কুল ছাত্রকে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক কোনও রকম চিকিৎসা না করে বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছিল হাসপাতালের এক কর্তব্যরত চিকিসকের বিরুদ্ধে। তার এক দিন বাদেই ফের আট মাসের এক শিশুকে কোন চিকিৎসা না করেই ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আরও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই দুই চিকিৎসককে শো-কজও করা হয়। তদন্তে আসেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের অভিযোগের আঙুল উঠল খোদ হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধেই। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার বিধুভূষণ মাহাতো বলেন, ‘‘সেদিন একটা জরুরি কাজে আমাকে বাড়ি যেতে হয়েছিল। মৌখিক ভাবে হাসপাতালের এক চিকিৎসককে বলে গেলেও লিখিত ভাবে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাওয়া হয়নি।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদার বলেন, ‘‘সুপার বাইরে গেলে বা ছুটিতে গেলে হাসপাতালের অন্য কোনও চিকিৎসককে সেই দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়া নিয়ম। করিমপুর হাসপাতালের ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ |