নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
জলপাইগুড়ি জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজে মনোনয়ন জমা দিতে পারল না তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। জেলার অন্যান্য কলেজে তৃণমুল ছাত্র পরিষদ মনোনয়নপত্র জমা দিলেও জেলা সদর জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র (এসি) কলেজ এবং প্রসন্নদেব মহিলা (পিডি) কলেজে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের কোনও প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। জেলার ছাত্র রাজনীতির অন্যতম আঁতুরঘর এসি কলেজ এবং জেলার একমাত্র মহিলা কলেজ পিডি কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংগঠন না থাকাতেই দলের পক্ষ থেকে এই কলেজ দুটির সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া হয়নি। তৃণমুল ছাত্র পরিষদের অবশ্য জানানো হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে ‘গোলমাল’ এড়াতেই দুটি কলেজে মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বক্তব্য, ওই দুটি কলেজে সংগঠন শক্তিশালী নয়। নির্বাচনের মুখে নতুন করে সংগঠন তৈরি করতে গেলে গোলমাল হতে পারে। তাই শাসক দলের দায়িত্বের কথা মাথায় রেখেই চলতি বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জলপাইগুড়ি জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক সৌরভ ঘোষ বলেন, “এসি কলেজ এবং পিডি কলেজে আমাদের সংগঠন একেবারেই নেই একথা ঠিক নয়। সংগঠন রয়েছে। তবে সেই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নির্বাচনের মুখে সংগঠন করতে গেলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সে কারণেই জেলা নেতৃত্ব দুটি কলেজের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” এক সময় সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের দুর্গ বলে পরিচিত এসি কলেজের ছাত্র সংসদ বছর দুয়েক ধরে ছাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে। এসএফআইয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য সরে গেলে ছাত্র পরিষদ এসি কলেজে নিজেদের সংগঠন তৈরি করেছে। সংসদ থেকে এসএফআই বিদায় নেওয়ার পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিট খুললেও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেনি বলেই সংগঠনের অন্দরে সমালোচনা রয়েছে। মনোনয়ন পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এসি কলেজের সংসদের ৪৫ টি আসনের অর্ধেক সংখ্যক আসনেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রার্থী দিতে পারত না বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। একই রকম ভাবে জেলা সদরের পিডি কলেজেও দীর্ঘদিন ধরে এসএফআই ক্ষমতায় থাকলেও গত বছর থেকে সমানে পাল্লা দিচ্ছে ছাত্র পরিষদ। সেখানে তৃণমুল ছাত্র পরিষদের ইউনিট থাকলেও সক্রিয় কর্মী নেই বলেই জানা গিয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, “এসি এবং পিডি কলেজে তৃণমূলের কোনও প্রার্থী নেই। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে এই দুটি ছাত্র পরিষদ আর তৃণমুল ছাত্র পরিষদ নিজেদের মধ্যেই গোলমাল বাধিয়েছে।” তবে জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি কলেজের নির্বাচনে প্রার্থী দিতে না পারার ঘটনায় তৃণমুলের অন্দরেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “জলপাইগুড়ি শহরের দুটি প্রধান কলেজে দলের কোনও ছাত্র সংগঠন নেই। নতুন নেতা কর্মী কীভাবে তৈরি হবে। অন্তত সংগঠন টিঁকিয়ে রাখতেই প্রার্থী দেওয়া উচিত ছিল।” |