রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের চুক্তির ভিত্তিতে পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত ঘিরে ‘বিতর্ক’ দানা বাঁধল।
রাজ্য সরকারের যুক্তি, ৯ হাজার ১৪৩টি শূন্য পদে পিএসসি-র মাধ্যমে নতুন নিয়োগ করতে হলে দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হত। সে ক্ষেত্রে অত শূন্য পদ নিয়ে দফতরের কাজ চালানো অসম্ভব হত।
তা ছাড়া, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পুনর্নিয়োগ করলে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হয় না। সে ক্ষেত্রে ওই খাতে সরকারের অনেক অর্থ বেঁচে যায়। তাই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (নবপর্যায়)’-এর যুক্তি, পিএসসি-র পরীক্ষা দিয়ে বেকার এবং যোগ্য ছেলেমেয়েরা চাকরি পেতে পারতেন। সরকার সেই পথ বন্ধ করে দিল।
তাদের আরও যুক্তি, এর ফলে খাদ্য দফতরে দুর্নীতিও বাড়বে। কারণ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা পুনর্নিযুক্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলেও বিভাগীয় তদন্ত করা যায় না। তা ছাড়া, যে সব কর্মী অবসরের পর পুনর্নিযুক্ত হতে চান, তাঁরা শাসকদলের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়াবেন। অর্থাৎ, এই প্রক্রিয়ায় ‘দলতন্ত্র’ প্রশ্রয় পাবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পুনর্নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন। তারই বাস্তবায়ন ঘটতে চলেছে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগে। সেখানে গ্রুপ এ, বি এবং সি মিলিয়ে ৯ হাজার ১৪৩টি শূন্য পদে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পুনর্নিয়োগ করা হবে। তার জন্য ‘ওয়াক-ইন ইন্টারভিউ’ শুরু হবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন যার প্রতিবাদে খাদ্যভবনে বিক্ষোভ দেখাবে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (নবপর্যায়)’।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বুধবার বলেন, “যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁরা কাজ করেন না। অফিসে এসেই বাড়ি চলে যান বা আমার ঘরের পাশে স্লোগান দিয়ে বেড়ান। পিএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগে আড়াই-তিন বছর সময় লাগে। অত দিন এতগুলি শূন্য পদ নিয়ে দফতর চালানো যায় না। আর পুনর্নিযুক্তদের কোনও আর্থিক দায়িত্ব দেওয়া হবে না। ফলে দুর্নীতির প্রশ্ন নেই।” |