ধান কেনার কাজে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তাঁর বক্তব্য, “অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, ওড়িশায় রাজ্য সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ধান কেনে। এই রাজ্যেও সেই পদ্ধতি শুরু হওয়া প্রয়োজন। ধান কেনায় এই গোষ্ঠীগুলিকে নিয়োগ করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বলব।”
বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যান পুরুলিয়ার মাওবাদী উপদ্রুত বলরামপুরের ঘাটবেড়া ও মণ্ডল-কেরোয়া গ্রামে। মণ্ডল-কেরোয়া গ্রামের চাষি গুরুপদ গরাই, বিভূতি মণ্ডলরা মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন, এ বছর ভাল ধান হলেও বিক্রি করতে গিয়ে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। মিলছে না সরকারি সহায়ক মূল্য। চাষিদের ক্ষোভ, “ধান বিক্রি করে কুইন্টাল পিছু মাত্র ৭৮০ টাকা (সহায়ক মূল্য ১,০৮০ টাকা প্রতি কুইন্টাল) পাওয়া যাচ্ছে।”
চলতি মরসুমে চাষিদের আত্মহত্যার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের ধান কেনায় ‘প্রত্যাশিত’ গতি আসেনি, এই অভিযোগ ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। এ দিন চাষিদের অভিযোগ শুনে জয়রাম রমেশ পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহের কাছে চাষিদের সহায়ক মূল্য না পাওয়ার কারণ জানতে চান। জেলাশাসক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানান, ওই চাষিরা প্রশাসনের নির্দিষ্ট করা কেন্দ্রে ধান বিক্রি না করে স্থানীয় ভাবে বিক্রি করেছেন। তাই সহায়ক মূল্য পাননি। তখন চাষিরা মন্ত্রী ও জেলাশাসককে বলেন, নির্দিষ্ট জায়গায় ধান বিক্রি করার ক্ষেত্রে দূরত্ব একটা বড় অন্তরায়। তা ছাড়া, সরকার নির্ধারিত ওই কেন্দ্রে ‘কম’ পরিমাণ ধান বিক্রি করা যায়। এর পরেই জয়রাম রমেশ বলেন, “অন্ধ্রপ্রদেশে দেখেছি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ধান কিনতে নামায় চাষিরা সহজেই নিজেদের গ্রামে ধান বিক্রি করতে পারছেন। সেখানে উৎপাদিত ধানের ২৫ শতাংশই কেনা হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে।” প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওড়িশা বা অন্ধ্রপ্রদেশে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ধান কেনার জন্য সরকার টাকা দেয়। গোষ্ঠীগুলি ধান সংগ্রহ করে সরকারকে জমা দেয়। বিনিময়ে ‘কমিশন’ পায়। বর্তমানে এ রাজ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে ধান সংগ্রহের কাজ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করা হলে ধান কেনা দ্রুততার সঙ্গে হবে বলেই অভিমত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। |