হেফাজতেই চাইল না পুলিশ
খুন-সহ নানা মামলায় ধৃত সিপিএম নেতা
তৃণমূলের কর্মী খুন-সহ একাধিক হামলায় অভিযুক্ত সিপিএমের পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সদস্য রঞ্জিত শ্যামকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার সকালে বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “রঞ্জিত শ্যামের বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মী খুন, বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট, মারধর করা-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। অনেক দিন ধরে তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এ দিন তাঁকে ধরা হয়।” বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে না চাওয়ায় ক্ষুদ্ধ তৃণমূলের একাংশ। পুলিশ সুপার জানান, অত্যন্ত দ্রুততার মধ্যে তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে। তাঁর সর্ম্পকে থাকা বিভিন্ন অভিযোগ ভাল করে বিচার করে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
পাত্রসায়র থানার বামিরা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিতবাবু সিপিএমের বালসি লোকাল কমিটির সম্পাদক ছিলেন। এ বার ওই লোকাল কমিটি তুলে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে পাত্রসায়র এলাকায় সিপিএম ও তৃণমূলের কর্মীদের হিংসায় এলাকা উত্তপ্ত ছিল। তখন বার বার রঞ্জিতবাবুর বিরুদ্ধে তৃণমূল সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু পুলিশ তাকে ধরেনি। বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই সিপিএমের এই দাপুটে নেতা বামিরা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। এর পর থেকে এলাকায় আর তাঁকে দেখা যায়নি। তবে পুলিশ তাঁর খোঁজ করছিল।
পুলিশ সূত্র জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি তৃণমূল কর্মী প্রবীর পাল, ওই বছরের ১১ অগাস্ট তৃণমূল কর্মী শেখ বদরে আলম মিদ্যা এবং ২০১১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল কর্মী জগন্নাথ বাগদি খুন হন। ওই তিনটি খুনের মামলায় রঞ্জিতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে একাধিক তৃণমূল কর্মীকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাটের ৩০টির বেশি মামলায় তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি দু’টি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
এলাকার দলীয় রাজনীতিতে পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সম্পাদক লালমোহন গোস্বামীর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলেই রঞ্জিতবাবু পরিচিত। এ দিন লালমোহনবাবু দাবি করেন, “রাজনৈতিক আক্রোশে তৃণমূল বিধানসভা ভোটের আগে আমাদের দলের বহু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করেছে। সেই মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তৃণমূল নেতৃত্বকে খুশি করার জন্য আমাদের দলের দক্ষ সংগঠক রঞ্জিতবাবুকে গ্রেফতার করেছে। এলাকার মানুষ প্রকৃত সত্য জানেন।” রঞ্জিতবাবুর ছেলে অনীক শ্যামের দাবি, “স্থানীয় তৃণমূল নেতা নব পাল প্রতিহিংসাবশত বাবার বিরুদ্ধে বহু মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। বাবা খুন খারাপির কোনও ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।” তৃণমূল নেতা নববাবুর পাল্টা দাবি, “সিপিএম মিথ্যা কথা বলছে। ওদের দলের বহু নেতা-কর্মী এলাকায় দিনের পর দিন সন্ত্রাস চালিয়েছে। তাদের নামেই থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।” তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “বিধানসভা ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন রঞ্জিত শ্যাম। আমাদের দলের কয়েক জন কর্মীকে তিনি খুন করেছেন। আমরা তাঁর কঠোর সাজার দাবি জানাচ্ছি।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “পুলিশ এ বার লালমোহন গোস্বামী ও তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার করুক। তাহলে সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার করা বহু বেআইনি অস্ত্রও উদ্ধার করা যাবে।” লালমোহনবাবু অবশ্য এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি কোথাও পালিয়ে যাইনি। পুলিশ গ্রেফতার করতে চাইলে করুক।” পুলিশ সুপার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের ধরা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.