সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
কর্ণাটককে ৫-১ গোলে উড়িয়ে বি সি রায় ট্রফির মূলপর্বের প্রথম ম্যাচ জিতল বাংলা। বুধবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠে বাংলার ফুটবলারদের খেলা নজর কেড়েছে জাতীয় জুনিয়র দলের কোচ কলিন টোলের। এ দিন দুপুরে শিলিগুড়িতে পৌঁছন তিনি। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বেলা ২টা নাগাদ যখন মাঠে পৌঁছন তখন বাংলা-কর্ণাটক ম্যাচ শুরু হতে চলেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচ দেখেন তিনি। বাংলার ফুটবলারদের পাশাপাশি কর্ণাটকের দুই এক জন খেলোয়াড়ও ভাল খেলেছে বলে জানান। কোন ফুটবলারদের খেলা জাতীয় কোচের ভাল লেগেছে তা না জানালেও এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের দর্শকদের নজর কেড়েছে যারা তাদের মধ্যে অন্যতম অবশ্যই বাংলার সুমিত ঘোষ, এস কে ফৈয়াজ। শুরু থেকেই এ দিন কর্ণাটককে চাপে রাখে তারা। খেলার ১০ মিনিটের মাথায় সুমিতের তোলা ক্রস হেড করে ফৈয়াজের গোল করার চেষ্টা অল্পের জন্য ব্যর্থ হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় সুমিত ঘোষ বাংলার প্রথম গোলটি করেন। দ্বিতীয় গোলটি করেন সায়ন দত্ত। বল জায়গা মত তার কাছে এগিয়ে দিয়েছে ফৈয়াজই। পরের গোলটি আবার সুমিতের। কলকাতার যানবাজারের ওই ফুটবলার শিলিগুড়ির মহানন্দা ক্লাবেও খেলেন। প্রথমার্ধেই ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বাংলা। কর্ণাটকের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন বিবেকানন্দ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এ দিন নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন সায়ন। গোল বাড়ানো ছাড়া এর পর বাংলার ফুটবলারদের উপর অন্য কোনও চাপ ছিল না। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় এ দিন খেলতে পারেননি বাংলার অন্যতম ফুটবলার রাজীব ঘড়ুই। অনূর্ধ্ব ১৬ জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। |
রাজীবের জায়গায় এ দিন রাখা হয়েছিল লালটু হেমব্রমকে। তবে প্রথমার্ধেই তাকে বসিয়ে নামানো হয় সৌভিক ঘোষকে। খেলার শেষের মুখে সৌভিক একটি গোলও করে। বাংলার কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “৫-১ গোলে জিততে পেরে আমরা খুশি। ফুটবলাররাও এ দিন ভাল খেলেছে। আলাদা করে কারও নাম করব না। তাতে দলের ঐক্য নষ্ট হতে পারে। মনে রাখতে হবে ট্রফি জেতাটাই আমাদের লক্ষ্য।” দল হারলেও কর্ণাটকের শ্রীধর, অ্যান্টো জেভিয়ার, রবি মেইতিরা ভাল খেলেছেন। এ দিন মূলপর্বের অপর খেলায় মিজরাম ১-০ গোলে হারিয়েছে ঝাড়খণ্ডকে। খেলার শুরু থেকেই মাঠের দখল নেয় মিজরামের ফুবলাররা। খেলায় একটি মাত্র গোল হলেও বেশ কিছু গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। খেলার শেষে যা দেখে কোচ লালটু আকলিয়ানা, ম্যানেজার বেনজামিনরা আক্ষেপ করে বলেন, “অনায়াসে এ দিন আরও ২ টি গোল আমরা করতে পারতাম। তা হল না। অনেক সুযোগ পেয়েও ফুটবলাররা কাজে লাগাতে পারল না।” শুক্রবার তারা মুখোমুখি হবে বাংলার। ৪ টি দলকে নিয়ে মূলপর্বে রবিন লিগ হয়েছে এ দিন থেকে। প্রতিটি দল ৩টি করে ম্যাচ খেলবে। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের যুব উন্নয়ন প্রকল্পের ডিরেক্টর কলিন টোল জানান, মূল পর্বের শেষ খেলা ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি শিলিগুড়িতে থাকছেন। ফুটবলার বাছতেই তিনি এসেছেন। মূলপর্বের খেলাগুলি দেখবেন। অন্য নির্বাচক যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে ফুটবলার নির্বাচন করবেন। কলিন বলেন, “এই প্রতিযোগিতা থেকে বাছা হবে ৭০ জন ফুটবলার। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গোয়াতে তাদের নিয়ে ফের ‘সিলেকশন ক্যাম্প’ হবে। সেখান থেকে ৩০ জনকে বাছা হবে শিবিরের জন্য। ২০১৩ এএফসি কাপের দল তৈরির লক্ষ্য নিয়েই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” অনূর্ধ্ব ১৬ জাতীয় দল তৈরির জন্য নভেম্বর থেকে প্রায় ৬ মাসের প্রশিক্ষণ শিবির হবে পুনে বা গোয়ায়। |