নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এক ধাক্কায় দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে গেল। নিজের কাছ থেকে নিজের প্রত্যাশার সংজ্ঞাটাও বদলে গেল বলে মনে করছেন ঝুলন গোস্বামী।
ডায়না এডুলজির পরে ক্রিকেটের দ্বিতীয় মহিলা পদ্মশ্রী। পঙ্কজ রায় এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরে বাংলার তৃতীয় পদ্মশ্রী ক্রিকেটার। “খুব উত্তেজিত লাগছে! এত বড় একটা সম্মান, এত অপ্রত্যাশিত ভাবে এল... কী যে বলব!” বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্যাম্প থেকে হোটেলে ফেরার পথে টেলিফোনে আপ্লুত ঝুলনের কণ্ঠস্বর। তবে বরাবরের সুবক্তা দ্রুত গুছিয়ে নিয়ে যোগ করলেন, “অসম্ভব গর্ব হচ্ছে। জীবনে এত তাড়াতাড়ি এত বড় সম্মান আসবে ভাবতেই পারিনি। প্রথমটা তো বিশ্বাসই হচ্ছিল না। এখন থেকে দায়িত্ব অনেক বাড়ল। নিজের কাছে প্রত্যাশাও বেড়ে গেল। আরও ভাল করতে হবে।”
অভিনন্দনের ফোনে-ফোনে জেরবার। চাকদহের টেস্ট ক্রিকেটার মেয়ে বলছিলেন, “সকাল বারোটা-সাড়ে বারোটা হবে আজ, সরকারি ফোনটা পেয়ে চমকে যাই।” খবরটা প্রথমেই জানান বাড়িতে। “মা যে কী খুশি হয়েছে কী বলব,” বলছিলেন মায়ের আদরের ‘বাবুল’। আঠাশ বছরের ঝুলনের জীবনে প্রাপ্তির ভাঁড়ার অবশ্য উপচে পড়া। ২০০৭-এ আইসিসি-র বর্ষসেরা মেয়ে ক্রিকেটার। ২০১০-এ অর্জুন। ২০১১-এ ভারতীয় বোর্ডের বিচারে দেশের সেরা মেয়ে ক্রিকেটার। আর নতুন বছরের গোড়াতেই পদ্মশ্রী। কোনটাকে আগে রাখবেন? ঝুলন বললেন, “প্রত্যেকটা সম্মানেরই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। তবে পদ্মশ্রী অনেক বড় ব্যাপার। আর এত অপ্রত্যাশিত ভাবে পেলাম বলেই বোধহয় বেশি ভাল লাগছে।” নিজের পরিবারের পরেই, কোচেদের আর টিমমেটদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন ঝুলন। “ওরা পাশে না থাকলে আমি এত দূর আসতে পারতাম না।”
নদিয়া থেকে যে দিন প্রথম কলকাতায় এসেছিলেন ক্রিকেট কোচিং নিতে, তখন কি কল্পনাতেও ছিল আজকের দিনটা? ঝুলনের অকপট জবাব, “না। ক্রিকেট আমার প্রথম প্রেম। বরাবর দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু কোনও দিনও অ্যাওয়ার্ডের জন্য খেলিনি। তবে সম্মানগুলো আরও ভাল করার জন্য অবশ্যই অনুপ্রাণিত করে।” পদ্মশ্রী সম্মানটা যেমন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর বোলারকে আগামী বছরের বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে আরও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে তুলেছে। তার আগে টিমমেটরা অবশ্য একটাই আবদার জানিয়েছেন পার্টি চাই। ভারত অধিনায়ক ঝুলন জানালেন পার্টি হচ্ছেই। তবে আজ নয়, কাল। “আজ আমাদের ফিটনেস পরীক্ষা ছিল। খুব ক্লান্ত হয়ে আছি। পার্টি-টার্টি সব কাল হবে।” |