বুনো হাতির হামলায় কয়েকদিন আগেও এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এ বার চিতাবাঘের হামলায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ির অদূরে কার্শিয়ার বন বিভাগের বামনপোখরি এলাকায়। ওই এলাকার মরিয়মবাড়ি ও লঙভিউ চা বাগানের শ্রমিক বস্তিতে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই চিতাবাঘ হানা দিচ্ছে শ্রমিক বস্তিতে। বাছুর, কুকুর, মুরগি টেনে নিয়ে যাচ্ছে। পিকনিকের মরসুমে প্রতিদিনই ওই এলাকায় বিভিন্ন চা বাগান ও জঙ্গলে জড়ো হচ্ছেন বহু মানুষ। চিতাবাঘের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কিত তাঁরাও। বন দফতর জানায়, চিতাবাঘ ধরতে দুটি বাগানেই খাঁচা পাতা হয়েছে। নজরদারি বাড়িয়েছেন বনকর্মীরাও। বুধবার দুটি বুনো হাতি সুকনায় মধুবন পার্ক লাগোয়া এলাকায় ঢুকে পড়লে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ত খবর পেয়ে ওই দুটি হাতিকেও জঙ্গলে ফেরত পাঠান বনকর্মীরা। কার্শিয়াঙের ডিএফও ওয়াই টি এডেন বলেন, “চিতাবাঘ বাগানে মাঝেমধ্যে ঢুকে পড়ে। তবে মানুষের উপরে হামলা হয়নি। মধুবনে হাতি বার হলে সুকনার এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা গিয়ে হাতি দুটিকে সরিয়ে দেন। ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।” ডিএফও আশ্বাস দিলেও চিতাবাঘ নিয়ে বামনপোখরি এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক দূর হচ্ছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় মাসখানেক ধরে কয়েকটি চিতাবাঘ চা বাগানের ঝোপে আশ্রয় নিয়েছে। বাগানের নির্জন এলাকায় শ্রমিকেরা যাচ্ছেন না। সন্ধ্যায় শ্রমিক বস্তিতে ঢুকে পড়ছে চিতাবাঘ। মরিয়মবাড়ি ও লঙভিউ চা বাগানের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, “এক মাসে চা বাগানের শ্রমিক বস্তিতে থেকে বেশ কয়েকটি বাছুর, কুকুর টেনে নিয়ে গিয়েছে চিতাবাঘ। জঙ্গলের ধারে সেগুলির আধ খাওয়া দেহ মিলেছে। সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে বার হতে ভয় পাচ্ছি।” বন দফতর সূত্রে খবর, এই সময়েই স্ত্রী চিতাবাঘ সন্তান প্রসব করে। প্রসবের জন্য চিতাবাঘের পছন্দের জায়গা হল চা বাগানের নালা কিংবা ঝোপ। ওই দুই বাগানে তাই চিতাবাঘের আনাগোনা বেড়েছে। পেতে রাখা খাঁচায় চিতাবাঘ ধরা পড়লে সেগুলি গভীর জঙ্গলে সরানো যেতে পারে। কিন্তু তার পরে নতুন আর একটি চিতাবাঘ যে সেখানে হানা দেবে না তার নিশ্চয়তা নেই। বন দফতরের পক্ষ থেকে এই কারণে জঙ্গল লাগোয়া চা বাগানের শ্রমিকদের নির্জন জায়গায় সতর্ক ভাবে চলাফেরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, যাঁরা পিকনিক করতে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় যাচ্ছেন তাঁদেরও বুনো হাতি এবং চিতাবাঘ সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে বলে বনকর্মীদের দাবি। |