|
|
|
|
ভাঙন রোধে ভেটিভার চাষ শুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
বন্যা প্রতিরোধে একশো দিনের কাজে ‘ভেটিভার ঘাস’ চাষ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল গত ২২ নভেম্বর। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই কাজ শুরু হল খানাকুল ১ ব্লকের উদনা গ্রাম-সংলগ্ন মুণ্ডেশ্বরী নদীবাঁধে। নিজের হাতে ঘাস রোপণ করে আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন হুগলির জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন। ঘাস রোপণ করেন আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, মহকুমা তথ্যসংস্কৃতি আধিকারিক ভাস্করজ্যোতি বেরাও। মহকুমার ৬ জন বিডিও-সহ বিভিন্ন আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক জানান, হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমা-সহ কয়েকটি এলাকা নদীবাঁধ কেন্দ্রীক। বন্যা প্রতিরোধে বাঁধগুলিতে ভাটিভার ঘাষ চাষ করে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও এই কাজে যুক্ত করা যাবে। আগামী আর্থিক বছর থেকে ব্যাপক হারে কাজ শুরু হবে নদীবাঁধ কেন্দ্রীক সমস্ত ব্লকেই। ভেটিভার চাষের মাধ্যমে ভাঙন রোধ নিয়ে তথ্য প্রথম নজরে এনেছিলেন ভাস্করজ্যোতিবাবু।
বন্যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এই ঘাসের চাষ রাজ্যে প্রথম। এর আগে পাহাড়ে ধস রুখতে শিলিগুড়িতে এই চাষ করে সুফল পাওয়া গিয়েছে। ভাস্করজ্যোতিবাবু জানান, ২০০৯ সালে বন্যার পরে ভূমিক্ষয় রোধে একটি সমীক্ষা চালাতে গিয়ে এই চাষের খোঁজ পান তিনি। থাইল্যান্ড, চিন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ ছাড়াও অসমেও এই চাষে সাফল্য মিলেছে। ঘাসের শিকড় মাটির নীচে ১৪ ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত। নদীপাড়ের মাটি ক্ষয় রোধে যে কারণে এই ঘাস খুবই কাজে লাগে।
ঘাসের শিকড় কঠিন মাটিতেও প্রবেশ করতে পারে। এর পাতে গবাদি পশুর সুষম আহার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। গবাদি পশু খেয়ে নিলেও দ্রুত এই ঘাষ ফের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। নদীবাঁধ তৈরির প্রচলিত পদ্ধতিগুলির থেকে এই চাষ কম খরচের এবং টেঁকসই।
মহকুমাশাসক জানান, চিরাচরিত প্রথায় বাঁধ মেরামতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। একশো দিনের কাজে ভাটিভার ঘাস চাষে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি খরচ হবে অনেক কম। এই ঘাস হস্তশিল্পের কাজেও ব্যবহৃত হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। ভেটিভারের এর আর একটি উপকারিতা হল, এই ঘাস বৃষ্টির জলের অপচয় ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। ফলে, মাটির নীচে জলস্তর বৃদ্ধি পায়। খানাকুল ১ বিডিও সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম দফায় উদনা গ্রামে ৯০০ মিটার নদীবাঁধ জুড়ে এই ঘাসের চাষ হবে। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৫ লক্ষ ৩২৫ টাকা। ঘাসের চারা ও অন্যান্য সামগ্রীর জন্য খরচ হবে ১১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। ৮২৬ জন জবকার্ডধারী কাজ করবেন। এ জন্য ১৮২৩৩টি কর্মদিবস সৃষ্টি হবে। ঘাসের চারা আনা হচ্ছে অসম থেকে। পরিবহণ নিয়ে চারা-পিছু খরচ ২ টাকা। |
|
|
|
|
|