ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যান ও ট্যাক্সি-স্ট্যান্ডগুলির অব্যবস্থা নিয়ে অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার। যাত্রীদের স্বার্থে শহরের তিনটি প্রিপেড ট্যাক্সি-স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ সরাসরি নিজেদের হাতে নিতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর।
বুধবার ট্যাক্সিমালিকদের তিনটি সংগঠনের সঙ্গে কথা বলার পর এ কথা জানান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি আরও জানান, যাত্রী-প্রত্যাখ্যান রুখতে পুলিশ ও প্রশাসন বিশেষ উদ্যোগী হবে।
আটের দশকের শেষে শহরে প্রিপেড ট্যাক্সির প্রথম স্ট্যান্ড হয় দমদম বিমানবন্দরে। পরে হাওড়া ও শিয়ালদহে হয় আরও দু’টি স্ট্যান্ড। যাত্রী-প্রত্যাখ্যান ও ইচ্ছেমতো ভাড়া চাওয়ার প্রবণতা রুখতে স্ট্যান্ডগুলি হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন স্ট্যান্ডে ভাড়ার হারে সামঞ্জস্যের অভাব ওঠে। পরে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “আপাতত সরকার এগুলির দায়িত্ব নিচ্ছে। বিজ্ঞানসম্মত ভাড়ার হার নির্ধারণ করে কাউকে স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
বিমানবন্দরের স্ট্যান্ডটি নিয়ন্ত্রণ করে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন। বেশি রাতে বিমানবন্দরের যাত্রীরা ট্যাক্সি না পেয়ে সমস্যায় পড়েন। ট্যাক্সি-মালিকেরা প্রস্তাব দিয়েছেন, মিটারে ধার্য ভাড়ার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি দিলে চালকেরা বেশি রাতে পরিষেবা দিতে আগ্রহী। এ কথা জানিয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “এ নিয়ে ট্যাক্সিমালিকেরা সরকারের অনুমতি চেয়েছেন। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু রাজ্যে নাকি এ রকম ব্যবস্থা আছে।” তবে, ‘আপাতত’ ট্যাক্সি ভাড়া বাড়বে না বলে মালিকদের সামনে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী।
যাত্রী-প্রত্যাখ্যান রোখার চেষ্টায় পরিবহণ দফতর শীঘ্রই বিশেষ কন্ট্রোল রুমও খুলবে। পরিবহণমন্ত্রী এ কথা জানিয়ে বলেন, পুলিশ ছাড়াও প্রত্যাখ্যাত যাত্রীরা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এর পাশাপাশি চালকদের বিশেষ ভাবে সচেতন করার জন্য শিবির হবে। মন্ত্রী বলেন, “পুলিশকে বলেছি যাত্রী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ এলে নির্বিচারে ব্যবস্থা নিতে।” সরকারি বিভিন্ন বাসের পরিকল্পনার মতো শহরের ট্যাক্সির রঙও নীল-সাদা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন পরিবহণমন্ত্রী। এই সঙ্গে বলেন, মোটর ভেহিক্লসের আইনে একসময়ে লেখা ছিল ট্যাক্সির রঙ হলুদ-কালো হবে। তাই, ট্যাক্সির রঙ বদলানোর আগে ওই আইন খতিয়ে দেখা দরকার।
বিধি-মোতাবেক ‘ইউরো ফোর’ ইঞ্জিনের ট্যাক্সি মিলছে না বলেও ট্যাক্সিমালিকেরা অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে এ দিন পরিবহণমন্ত্রী রাজ্যের প্রধান ট্যাক্সি-প্রস্তুতকারক সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সঙ্গে মহাকরণে কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যিক লাইসেন্সবিহীন কিছু গাড়ি ইচ্ছেমতো ভাড়ায় ‘শাট্ল’ খাটছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা কড়া হাতে দমন করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। |