রাত আটটার উড়ানে দিল্লি থেকে জন্মভূমি কলকাতায় এলেন তিনি। এলেন তাঁর নতুন কবিতার বই ‘দ্য রিভার্ড আর্থ’ নিয়ে। কলকাতার উপকণ্ঠে বাটানগরেই জন্মেছিলেন বিক্রম শেঠ!
কলকাতার প্রথম সাহিত্য উৎসবে বিক্রমই অন্যতম আকর্ষণ। তহমিনা আনম, কুণাল বসু, মহম্মদ হাড়িফ অনেকেই জয়পুর সাহিত্য উৎসব থেকে সরাসরি যোগ দিতে আসছেন ‘কলকাতা সাহিত্য উৎসবে’। বিক্রম জয়পুরে যাননি। শুধুই কলকাতায়। ‘দ্য রিভার্ড আর্থ’ আসলে কবিতা ও সঙ্গীতের অপূর্ব নএক মিশ্রণ। চারটি গীতিকবিতা নিয়ে এটি আসলে ‘লিবারেতি’, অর্থাৎ অপেরায় গান বোঝার জন্য যে গীতিকবিতার বই দেওয়া হয়। বিদেশি অপেরা দেখেই এ শহরের এক সন্তান এক দিন ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ রচনা করেছিলেন। তাঁর সার্ধশতবর্ষে যেন সম্মান জানাতেই ১২০ পাতার চারটি লিবারেতির সংগ্রহ নিয়ে ঘরে ফিরলেন বিক্রম।
ঘরে ফেরাটা হয়তো জয়পুরের থেকে কিঞ্চিত উপভোগ্য হবে তাঁর কাছে। আগামী কাল রয়েছে বিক্রমের একটি অধিবেশন। অধিবেশন রয়েছে উৎসবের শেষ দিনে তাঁর মা লীলা শেঠের সঙ্গেও। বিক্রম একাধিক বার জয়পুর সাহিত্য উৎসবে গিয়েছেন, কিন্তু মা-ছেলেকে একসঙ্গে সেখানে মঞ্চে দেখা যায়নি। কলকাতার প্রথম সাহিত্য উৎসব সে ব্যাপারেও পথিকৃত হয়ে থাকল।
বিক্রমের এই লিবারেতিতে সুর দিয়েছেন অ্যালেক রথ। দু’জনের বোঝাপড়াও ছিল মারাত্মক। বিক্রমের একটি কবিতায় সুর বসাতে পারছেন না রথ। কবিকে সুরকার বললেন, এই ‘ফায়ার’ কবিতাটি বড় বেশি সাহিত্যগুণের। সুর বসাতে গেলে অন্য ভাবে লেখো। দরকার হলে বাড়ি গিয়ে মদ্যপান করো। ‘‘বেশ কয়েক গ্লাস ওয়াইন উড়িয়েছিলাম। যা দাঁড়াল, অ্যালেকের চূড়ান্ত খ্যাপামির সঙ্গীত এবং আমার অন্য ধাঁচের মজাদার কবিতা।” বলেছেন বিক্রম।
বলা বাহুল্য, এই ‘ওয়াইন’ নিয়ে জয়পুর সাহিত্য উৎসবে এক বার বিতর্কে পড়তে হয়েছিল বিক্রমকে। তিনি মঞ্চে বসে ওয়াইন পান করছেন, এই রকম অভিযোগ করেছিল হিন্দি মিডিয়া। গত বছর বিক্রম জয়পুরে গ্লাস হাতে মঞ্চে উঠলেন এবং সবাইকে দেখিয়ে বললেন, “এটা কিন্তু জল।” কলকাতাকে তিনি এই উৎসবে কী ভাবে সাহিত্যসুধা পান করান, সেটাই দেখার। |