|
|
|
|
পরিষেবা মিলছে না, দু’টি কেন্দ্র বন্ধ করে দিলেন বাসিন্দারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁকরতলা |
উপভোক্তা কমিটি (বেনিফিসিয়ারি) গঠিত হয়নি। তাই অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র থেকে যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন না মা ও শিশুরা। মূলত এই অভিযোগে একই গ্রামের দু’টি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র বন্ধ করে দিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকরতলা থানা এলাকার কদমডাঙা গ্রামে। ওই গ্রামের গ্রামোন্নয়ন সচিব অজিত মণ্ডল এবং কংগ্রেসের টিকিটে জেতা নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য আনিসুর রহমান (বর্তমানে তিনি তৃণমূলে)দের দাবি, “একাধিকবার বলা হলেও ওই কমিটি গঠনে কোনও উদ্যোগই নেয়নি ওই দু’টি কেন্দ্রে নিযুক্ত দুই কর্মী। বিষয়টি আগে খয়রাশোলের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিককে। কাজ হয়নি, তাই মানুষ অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র দু’টি খুলতে বারণ করেছেন।”
যদিও কদমডাঙা গোয়ালপাড়া অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের কর্মী নিয়তি মণ্ডলের অভিযোগ, “দু’টি নয়, শুধু আমার অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। সেটাও ৭৯ জন মা এবং শিশুর খাবার অর্ধেক রান্না হওয়ার পরে। ফলে ওই খাবার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মা এবং শিশুরা।” তাঁর আরও দাবি, “গ্রামোন্নয়ন সচিবের নেতৃত্বে এ কাজ হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে সিডিপিও এবং কাঁকরতলা থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কদমডাঙার দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের একটি রয়েছে গোয়ালাপাড়ায়। অন্যটি বাউড়ি পাড়ায়। গ্রামের ওই দু’টি কেন্দ্র থেকে ১৬০-১৬৫ জন গর্ভবতী ও প্রসূতি এবং পাঁচ বছরের নীচে থাকা শিশু নির্ভরশীল। বাউড়িপাড়ার বাসিন্দা সুনীল বাউড়ি, যুগল বাউড়ি, গোয়ালাপাড়ার মণ্টু মণ্ডল, অজিত মণ্ডলদের কথায়, “মা এবং শিশুদের জন্য যে পরিমান খাবার বরাদ্দ সেটা ঠিক মতো ও নিয়মিত রান্না করা হচ্ছে কি না, দেখার কেউ নেই যতক্ষণ না বেনিফিসিয়ারি কমিটি গঠিত হচ্ছে। তা ছাড়া, গোয়ালপাড়া কেন্দ্রের কর্মী নিয়মিত আসেন না। ফলে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মা এবং শিশুরা। বহুবার কেন্দ্রের কর্মীদের বলা হয়েছে, ফল হয়নি। বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”
বাউড়িপাড়া অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের কর্মী সোনালি মণ্ডল অবশ্য বলেন, “আমার কেন্দ্রে যথারীতি রান্না হয়েছে। শুধুমাত্র শীঘ্রই ওই কমিটি গঠন করতে বলেছেন ওঁরা।” অন্য দিকে, গোয়ালাপাড়া কেন্দ্রের কর্মী নিয়তি মণ্ডল বলেন, “আমি নিয়মিত কেন্দ্রে আসি। বর্তমানে আমার কেন্দ্রে নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আগে কোনও ঘর ছিল না। তাই অপরের জায়গায় উনুন ধরিয়ে কোনও ক্রমে কেন্দ্রটি চালাচ্ছি। এই অবস্থায় বেনিফিসিয়ারি কমিটি গঠিত না হওয়ার জন্য যে আচরণ করা হচ্ছে সেটা উচিত হয়নি।” তাঁর দাবি, “কমিটি গঠনের জন্য শুধু আমার উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। সেখানে গ্রামের মানুষ, নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থাকবেন। কিন্তু কোনও কথা না শুনে উনুন নিভিয়ে দিয়ে এত জনের খাবার নষ্ট করে দিলেন গ্রামোন্নয়ন সচিব এবং কয়েক জন।” গ্রামোন্নয়ন সচিব অজিত মণ্ডল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, “ওই কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকাকে শুধু রান্না করতে বারণ করেছিলাম। খাবার নষ্ট করার প্রশ্ন ওঠে না।” খয়রাশোল ব্লকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাজনগরের সিডিপিও মহম্মদ সফিউল্লা বলেন, “বেনিফিসিয়ারি কমিটি গঠন করার জন্য সুপারভাইজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।” |
|
|
|
|
|