রায়নার একটি তেলকলে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত পাঁচ জনকে বুধবার আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিল বর্ধমানের ফাস্ট ট্র্যাক ফার্স্ট কোর্ট। পাশাপাশি, ধৃত এই পাঁচ জনকে মাথাপিছু দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ শুনিয়েছেন বিচারক মুক্তিপদ মণ্ডল।
গভীর রাতে কর্মীদের মারধর করে ১২ চাকার ট্রাকে সমস্ত যন্ত্রপাতি নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল। ঘটনাটি ২০১০ সালের ১৪ নভেম্বরের। রায়নার জোতরাসাপ গ্রামে লুঠপাট হওয়া তেলকলের মালিক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরের দিন। কিন্তু জেলা পুলিশ তদন্তে নেমে হালে পানি পায়নি। মামলাটি সঁপে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে। এর পরে ঘটনার তদন্তে নামেন সিআইডির অফিসার অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায়। তেলকলের কর্মীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পাঁচটি মোবাইলের সূত্র ধরে শুরু হয় সিআইডির তদন্ত।
সরকারি আইনজীবী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানিয়েছেন, মোবাইলের টাওয়ার সন্ধান করে সিআইডি প্রথমে ২০১১ সালের নভেম্বরের গোড়ায় গ্রেফতার করে বর্ধমান শহরের বাসিন্দা কৃষ্ণ বাগদিকে। তাকে জেরা করে একে একে গ্রেফতার করা হয় গলসির পুরষা থেকে সিরাজুল হক মণ্ডল, বোলপুরের কাশীপুর থেকে শেখ মুন্না, ভাতারের এরুয়ার গ্রাম থেকে শেখ সুকুর ওরফে হালিম, হাওড়ার বালি থেকে ভগীরথ সিংহকে।
এই ভগীরথ সিংহ পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁকে জেরা করে, স্থানীয় মধ্য জয়পুরের বিল থেকে লুঠ হওয়া বেশ কিছু যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। পরে বাকি মালপত্র উদ্ধার করা হয় ডানকুনির মাইতি পাড়ায় একটি প্লাস্টিক কারখানা থেকে। আদালতে জামিন পায়নি ধৃতেরা। জেল হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিচার প্রক্রিয়া।
তবে এই রায়ে অভিযুক্তদের আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “মামলার বিচার চলার সময় প্রমাণ হিসেবে উদ্ধার হওয়া মালপত্র আদালতে হাজির করানো হয়নি। এমনকী, যে ১২ চাকার ট্রাকটি করে ডাকাতেরা এসেছিল বলে দাবি করা হয়েছে, তার নম্বরও পেশ করা হয়নি আদালতে।” ফলে অভিযুক্তেরা হাইকোর্টে সুবিচার চাইবেন, জানিয়েছেন স্বপনবাবু। |