প্রস্তুতি প্রায় শেষ। প্রত্যেক বারের মতো সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মাততে প্রস্তুত কালনা। প্রত্যেক পুজো কমিটিতেই এ বার হরেক রকম থিমের পসরা। উদ্যোক্তাদের দাবি, থিমের টানে এ বার প্রথম দিন থেকেই ভিড় জমাবেন লোকজন।
প্রত্যকে বছরই সরস্বতী পুজো ঘিরে উৎসবে মাতেন কালনার বাসিন্দারা। তিন দিন ধরে চলে এই উৎসব।
শহরের আমলাপুকুর ইয়ং বয়েজ ক্লাবের এ বারের থিম ‘অরণ্যের অধিকার’। মাটির মডেলের মাধ্যমে পিন্টু ভট্টাচার্য ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটিয়ে তুলেছেন নির্বিচারে গাছ কাটার সঙ্কট। পিন্টুবাবুর কথায়, “ গাছ থাকলে মানুষ থাকবে। আমরা মণ্ডপে এ কথাই বলতে চাইছি।” কালনার গোলক সমিতিরও এ বারের থিম ‘গাছ কাটার সঙ্কট’। গাছ কাটার কারণে শুধু মানুষ নয়, বিপন্ন হচ্ছে জীবজগৎ। এ কথাই তাঁরা জানাতে চান মণ্ডপসজ্জার মধ্যে দিয়ে। একটি শুকনো গাছে ঝোলানো থাকবে নানা আবেদন। |
আমলা পুকুরের কাছাকাছি কালীনগর পাড়ার এ বারের থিম ‘মনের মানুষ’। মণ্ডপটি তৈরি হচ্ছে খড়ের ছাউনি দেওয়া দ্বিতল মাটির বাড়ির আদলে। বাড়ির ভিতরে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। অন্ধকারের মধ্যে হ্যারিকেনের আলোয় সেটিই হয়ে উঠবে বাউলের আখড়া। ক্লাবের সভাপতি মহানন্দ গোস্বামী জানান, নদিয়া, মালদহ, হুগলি থেকে আসা বাউল শিল্পীরা হাজির থাকবেন সেখানে। তিনি বলেন, “বাউল গানে লোকশিক্ষা হয়। আশা করছি, দর্শকের নজর কাড়বে এই উদ্যোগ।”
শহরের বিদ্যাবাগীশ পাড়ার নেতাজি সঙ্ঘের এ বারের থিম সর্বশিক্ষা মিশন। মাটির মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে মিড-ডে মিলের রান্না, পরিবেশন, সবরকম সামাজিক ভেদাভেদ সরিয়ে ছাত্রছাত্রীদের এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার দৃশ্য। মণ্ডপের চারপাশে রাখা হচ্ছে সর্বশিক্ষা বিষয়ক নানা স্লোগান। মণ্ডপশিল্পী শ্যামচন্দ্র হালদার বলেন, “মিড-ডে মিলের রান্না মুখে তোলা নিয়ে অনেকেরই অনেক সংস্কার থাকে। আমরা বিভেদের প্রাচীরটা ভাঙতে চাইছি।” ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর দ্বিতীয় দিনে সচেতনতামূলক মডেলগুলি নিয়ে একটি মিছিল বের করা হবে।
পুরাতন সঙ্ঘের এ বারের থিম জঙ্গলমহল। কিষেনজির মৃত্যু থেকে জাগরী বাস্কের আত্মসমর্পণের দৃশ্য তুলে ধরা হচ্ছে থিমে। ক্লাব সদস্যদের দাবি, সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার বার্তা দেওয়া হচ্ছে থিমের মাধ্যমে।
হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তার পরেই সরস্বতী পুজোর মাতবে কালনাবাসী। |