কেন্দ্রীয় রক্ষী-বাহিনী সরাচ্ছে এমএএমসি, প্রতিবাদে শ্রমিকেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা এমএএমসি থেকে সিআইএসএফ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বুধবার কারখানার গেটে একযোগে বিক্ষোভ দেখাল আইএনটিইউসি, সিটু এবং আইএনটিটিইউসি। সংগঠনগুলির দাবি, এক বার সিআইএসএফ চলে গেলে দেদার চুরি শুরু হয়ে যাবে কারখানায়। আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এর আগেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিওজিএলের নিরাপত্তার দায়িত্ব বেসরকারি হাতে যায়। তার পরেই দেদার চুরি শুরু হয়ে যায় ওই কারখানায়। সিআইএসএফ চলে গেলে এমএএমসির-ও একই হাল হবে।”
১৯৬৫ সালে মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশন বা এমএএমসি-র যাত্রা শুরু। খনির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি তৈরি হত এই কারখানায়। ১৯৯২ সালে ওই সংস্থা বিআইএফআর-এ চলে যায়। ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১০ সালের ১১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল), দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) এবং ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেডের (বিইএমএল) কনসর্টিয়াম মিলিত ভাবে নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে কারখানার দায়িত্ব পায়। অগস্ট মাসে কনসর্টিয়ামের হাতে কারখানার চাবি তুলে দেন লিক্যুইডেটর। এর পরেই কারখানা থেকে ধাপে ধাপে সিআইএসএফের প্রহরা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় কেন্দ্র।
কিন্তু সিআইএসএফ চলে গেলে কারখানার ভিতরের কয়েকশো কোটি টাকার যন্ত্রপাতি লুঠ করে নিতে পারে দুষ্কৃতীরা। কনসর্টিয়ামের অন্যতম অংশীদার বিইএমএল-ই এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে সিআইএসএফ রাখার আর্জি জানায়। ৩১ মার্চ ২০১১ পর্যন্ত সিআইএসএফ রাখার কথা জানিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিইএমএলের অনুরোধে এর পরেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সেই সময়সীমা বাড়িয়েছে বার বার। কিন্তু কারখানায় সিআইএসএফ জওয়ানদের থাকার উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় এই সময়সীমা আর বাড়ানো সম্ভব নয় বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে এই বছর ৬ জানুয়ারি দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন যুগ্ম সচিব (পুলিশ ২) এন এস কলসি। খবর জানাজানি হতেই কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।
আইএনটিইউসি নেতা অসীমবাবু জানান, কারখানায় বহু মূল্যবান যন্ত্রপাতি রয়েছে। সিআইএসএফ পাহারায় থাকাকালীনই মাঝে মাঝে দুষ্কৃতীরা সে সব যন্ত্রপাতি চুরির চেষ্টা করত। তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সিআইএসএফ। কিন্তু সিআইএসএফ চলে গেলে কারখানা প্রায় অরক্ষিত হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, “বিওজিএল একেবারে সাফ করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এমএএমসির হাল তেমন হলে এই কারখানা আর খোলার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। এলাকার মানুষের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।”
কারখানায় সিআইএসএফ পাহারা যাতে বহাল থাকে সেই আর্জি জানিয়ে ফের তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন অসীমবাবু। এমএএমসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। |