পূর্ত দফতর টাকার অভাবে বিটুমিন সরবরাহ করতে না পারায় কোচবিহার জেলার অন্ততপক্ষে ১০টি রাস্তার সংস্কারের কাজ থমকে রয়েছে। এমন কী, কবে বিটুমিন সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তাও পূর্ত দফতরের কর্তারা স্পষ্ট জানাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। প্রতিটি রাস্তার ক্ষেত্রেই ‘ওয়ার্কঅর্ডার’ জারি হয়ে গিয়েছে বলে দফতর সূত্রের খবর। ওই সমস্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ফেলে রাখা বালি, পাথর সহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বেগ বেড়েছে ঠিকাদার মহলেও। জেলার পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস সাহা বলেন, “সম্প্রতি ‘নন প্ল্যানিং’ খাতে আমরা ১ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। তা থেকে বকেয়া মেটানোর পাশাপাশি বিটুমিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও কিছুদিন সময় লাগলেও সমস্যা মিটে যাবে।” দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহার-দিনহাটা রাস্তার বেশকিছু অংশ ছাড়াও দিনহাটা-গোসানিমারি, নাটাবাড়ি-চিলাখানা, মাথাভাঙ্গা-হাজরাহাট, শহরের রুপনারায়ণ রোড-সহ ১০টি রাস্তা সংস্কারের জন্য ওয়ার্ক-অর্ডার জারি হয়। ঠিকাদারেরা কাজ শুরুর প্রস্তুতি নেন। কয়েকটি রাস্তায় বালি, পাথরও ফেলা হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার কাজের জন্য পূর্ত দফতর বিটুমিন সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু বিটুমিন না থাকায় রাস্তাগুলির কাজ শুরুই হয়নি। পূর্ত দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানান, গত পুজোর পর থেকেই টাকার অভাবে বিটুমিন কেনা যায়নি। এক মাসের আগে সমস্যা মেটার সম্ভবনা কম। কারণ, বরাদ্দ এলেও তা দফতরের রিসোর্স ডিভিশনে হস্তান্তর করা হবে। এর পরে হলদিয়া থেকে বিটুমিন পাঠানো হবে। পদ্ধতিগত কারণেই সব মিলিয়ে সময় লাগবে। এই অবস্থায় নিত্যযাত্রী থেকে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। মাথাভাঙ্গা-হাজরাহাট রুটের কয়েকজন যাত্রী জানান, রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার আগে বিটুমিনের যোগানের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। পূর্ত দফতরের কর্তারা সমস্যা মেটাতে আন্তরিক নন বলেই পরিকল্পনামাফিক ভাবে ব্যবস্থা নেননি। জেলার ঠিকাদারদের অভিযোগ, একে বিভিন্ন কাজের বকেয়া বাবদ প্রায় ৪০ কোটি টাকা এখনও মেটানো হয়নি। তার পরে বিটুমিন সরবরাহের দিনক্ষণ আধিকারিকরা বলতে পারছেন না। রাস্তায় ফেলে রাখা বালি, পাথর নষ্ট হচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে দ্রুত কাজ শুরু করতে না পারলে ক্ষতি আরও বাড়বে। কোচবিহার কন্ট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃণাল ভদ্র বলেন, “অন্ততপক্ষে ১০টি রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। দ্রুত সমস্যা মেটানো না হলে আন্দোলনে নামতে হবে।” |