মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার বার্ষিক ক্রীড়ার আমন্ত্রণপত্রের অতিথি তালিকায় এলাকার বাসিন্দা তথা বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন ও স্থানীয় বিধায়ক বিনয় বর্মনের নাম না থাকার ঘটনায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল ও কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, মাথাভাঙা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বাম মনোভাবাপন্ন কো-অর্ডিনেশন কমিটির কর্তাদের একাংশ দলবাজি করেছেন। সোমবার দুপুরে ওই অভিযোগ তুলে মাথাভাঙার নেতাজি সুভাষ ক্রীড়াঙ্গণে অনুষ্ঠান চলার সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা স্থানীয় নেতা আলিজার রহমানের নেতৃত্বে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। তার আগে রবিবার রাতে আমন্ত্রণপত্র দিতে গেলে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধিদের ফিরিয়ে দেন ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রী। বনমন্ত্রীর অভিযোগ, “ওই সংস্থায় কো-অর্ডিনেশন কমিটির কয়েকজন ছড়ি ঘোরান। তাঁরাই এমন জটিলতা তৈরি করেছেন।” মাথাভাঙ্গার বিধায়ক বিনয় বর্মন জানান, তিনিও আমন্ত্রণপত্র পাননি। তাঁর বক্তব্য, “এটা সৌজন্যের ব্যাপার। বামমনোভাবাপন্নরা তা দেখাতে চাননি। মানুষ সব জানেন। তারাই এ সবের উত্তর দেবেন।” মাথাভাঙ্গার তৃণমুল শ্রমিক কংগ্রেসের নেতা আলিজার রহমান জানান, মন্ত্রী-বিধায়করা সব সময় এলাকায় থাকবেন ভাবা ঠিক নয়। তাঁ যুক্তি, “এখন মোবাইলের যুগ। অনুমতি নিতে কতক্ষণ লাগে! কো- অর্ডিনেশনের যে নেতারা ওই সংস্থায় আছেন তারা ছক কষে দলবাজি করেছেন। মানুষ তা মানতে পারেননি। তাদের স্বতঃস্ফুর্ত ক্ষোভে সামিল হয়েছি। কারণ খেলার মাঠে আমরা রাজনীতি চাইনা।’’ এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা নেতৃত্ব। সংগঠনের কোচবিহার সভাপতি পুলক বিশ্বাস বলেন, “মহকুমা স্তরের অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাসিন্দা মন্ত্রী ও বিধায়কের নাম থাকলে ভাল হত। কোনও নাম রাখা যাবেনা এমন নির্দেশও আমরা কাউকে দিইনি। মাথাভাঙায় কেন এমন হয়েছে, সেটা শ্যামলবাবুই ভাল বলতে পারবেন।” বিব্রত মাথাভাঙা মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা। পদাধিকার বলে খোদ মহকুমা ওই ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। মহকুমা শাসক ছিয়াং পালজার বলেছেন, “আমি সভাপতি হলেও আমন্ত্রণপত্র ছাপানোর আগে তা দেখানো হয়নি। মন্ত্রী ও বিধায়কের নাম অবশ্যই থাকা দরকার ছিল। যোগাযোগের ভুলে ওই ঘটনা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা দেখা হচ্ছে।” মাথাভাঙ্গা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক শ্যামল সেন জানান, সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি কো-অর্ডিনেশন কমিটির সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর দাবি, “আমন্ত্রণপত্রের মন্ত্রী ও বিধায়কের নাম না-থাকাটা অব্যশই ত্রুটি। তবে তা অনিচ্ছাকৃত। আমন্ত্রণ পত্র ছাপানোর আগে মন্ত্রী ও বিধায়ক বাইরে থাকায় তাদের সঙ্গে দেখা করে সম্মতি নেওয়া যায়নি বলে এমন ঘটনা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসায় আমরা মন্ত্রীর কাছে ভুল স্বীকার করে আমন্ত্রণ পত্র দিতে গিয়েছিলাম। উনি তা ফিরিয়ে দেন।” |