হুগলি জেলার হাসপাতালগুলিতে এক্স-রে প্লেটের আকাল চলছে।
এর ফলে অসুস্থেরা হাসপাতালে এসে সমস্যায় পড়ছেন। ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। না হলে বাইরে থেকে বেশি টাকা খরচ করে করাতে হচ্ছে এক্স-রে।
দীর্ঘদিন ধরেই হুগলির হাসপাতালগুলির একই হাল। কবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে তার নির্দিষ্ট কোনও উত্তর অবশ্য সরকারি হাসপাতালগুলির কর্তাদের জানা নেই। এক্স-রে প্লেট না থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা সবাই রীতিমত ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, বার বার হাসপাতাল সুপার এবং জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের বিষয়টি জানান হলেও সমাধান সূত্র মেলেনি। এর ফলে রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে নিত্যদিন প্রতিটি হাসপাতালে ঝামেলা বেধে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্মীদের রোগীর বাড়ির লোকজন ‘ভুল বুঝছেন’ হাসপাতালের কর্মীদের।
জেলা সদর চুঁচুড়ার সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মী বলেন, “সরকারি হাসপাতালের কর্মীরা ভাল কাজ করলেও রোগীর বাড়ির লোকজনের মন পান না। তার উপর এক্স-রে প্লেট মিলছে না। আমরা সত্যি কথা বলছি। রোগীর বাড়ির লোকজন তা শুনছে না। তাঁরা ভাবছেন, হাসপাতালে প্লেট আছে। আমরাই ইচ্ছে করে এক্স-রে করছি না।” শ্রীরামপুর, জেলা সদর ইমামবাড়া, চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল সর্বত্রই কমবেশি একই চিত্র উঠে এসেছে।
গ্রামীণ হাসপাতালগুলিরও একই হাল। সেখানে রোগীদের পরিস্থিতি আরও খারাপ। শহর অঞ্চলে অবশ্য রোগীরা প্রয়োজনে বাইরের কোনও এক্স-রে ক্লিনিক থেকে তাঁরা কাজ সেরে নিতে পারেন। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র এক্স-রে ক্লিনিক পাওয়াই মুশকিল। প্রয়োজন পড়লে রোগীরা হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না। কোনও কোনও সরকারি হাসপাতালে অবশ্য এক্স-রের ছোট প্লেট প্লেট অল্প পরিমাণে মিলছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় এতটাই কম যে অভাব মিটছে না।
কেন এই পরিস্থিতি?
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি এক্স-রে প্লেটের দাম বাড়িয়েছে সরবররাহকারী সংস্থাগুলি। কিন্তু সরকার যে দামে কিনে থাকে তার থেকে বাড়তি দামে কেনার অনুমতি নেই এখন। সেই অনুমতি মিলছে কিছুটা সময় প্রয়োজন। তার ফলেই জোগান এবং প্রয়োজনের সমতা রক্ষিত হচ্ছে না। সাবেক দামে এক্স-রে প্লেট সরবরাহ করতে সরবরাহকারী সংস্থাগুলি রাজি নয়। যদিও সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, স্থানীয় ভিত্তিতে এক্স-রে প্লেট কিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ চালিয়ে নিতে।
হুগলির সিএমওএইচ উন্মেষ বসু অবশ্য বলেন, “এক্স-রে প্লেটের সরবরাহে কিছু সমস্যা রয়েছে। যদিও কিছু প্লেট জেলা সদরে এসেছে। কিন্তু ছুটি থাকায় তা সরবরাহ করা যায়নি। যদিও স্থানীয় ভিত্তিতে প্লেট কেনার জন্য হাসপাতাল সুপারদের বলা হয়েছে।” ‘ভুক্তভোগী’ হাসপাতাল সুপারেরা অবশ্য জানিয়েছেন, কর্তারা নানা কথা বলেন। কিন্তু কতদিন স্থানীয় ভিত্তিতে এক্স-রে প্লেট কিনে চালান যায়? তার তো একটা মাত্রা আছে।
এই প্রশ্নে উত্তর যথারীতি মেলেনি। অতএব রোগীদের ভোগান্তি আপাতত মিটে যাওয়ার লক্ষণ নেই। |