অন্ধকার শ্মশানে অবাধ মদের ঠেক
ন্ধে নামতেই অন্ধকার। থেকে থেকেই শিয়ালের কোরাস। আলোছায়া, ঝোপঝাড়ের আড়ালে কুমারপুর শ্মশান যেন এ সময়ের জন্যই দিন ভর অপেক্ষা করে।
সমাজবিরোধীদের মদ্যপানের ‘খোলা ঠেক।’ হ্যাঁ এ নামেই কুমারপুর শ্মশানকে চেনেন স্থানীয়রা। যেখানে সৎকারের জন্য গেলে শববাহকদের বয়ে নিয়ে যেতে হয় বাড়তি দুশ্চিন্তাও। বিদ্যুতের সামান্য ব্যবস্থা নেই। সৎকারের আগে মৃতের ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ যাচাই করে নাম রেজিস্ট্রেশনের কোনও রেওয়াজ এ শ্মশানে নেই। ফলে অনেক সময়েই অপঘাতে মারা যাওয়া শব ময়নাতদন্ত ছাড়াই পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে বহুবার। স্থানীয় পঞ্চায়েতের অবশ্য তাতে বিশেষ হেলদোল নেই। হাত ঝেড়ে ফেলেছে স্থানীয় থানাও।
আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দেহ সৎকার করতে গেলে বয়ে আনতে হয় কাঠ, রাত বিরেতে সঙ্গে চাই লণ্ঠন। জলটুকুও মেলে না এখানে। দেহ নিয়ে এসে নিজেদেরই মাটি কেটে শবদাহ করতে হয় আত্মীয়-পরিজনদের। শ্মশানে এক জন ডোম অবশ্য আছেন। কিন্তু ‘অচেনা মন্ত্র’ আওড়ে দায় সারেন তিনি। এমনই অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনিতেই ভাগীরথীর দু’দিকে বেলডাঙা, রেজিনগর, কালীগঞ্জ কোন শ্মশানেই বৈদ্যুতিক চুল্লি নেই। নওদা, হরিহরপাড়া এবং বেলডাঙার মানুষের জন্য ভাগীরথীর তীরে কুমারপুর শ্মশানই ভরসা। অথচ সেখানে শ্মশান যাত্রীদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট স্নানের ঘাট নেই। শবদাহ করার জন্য যে সামান্য ছাউনিটুকু রয়েছে, তাও জলাশয় থেকে বেশ খানিকটা দূরে। যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং শৌচাগারও প্রয়োজনের তুলনায় ছোট। পরেশনাথপুরের বাসিন্দা সনাতন মণ্ডল বলেন, “দিন কয়েক আগেই এক পড়শির মরদেহ নিয়ে শ্মশানে গিয়েছিলাম। আলো নেই। আমরা প্রায় চল্লিশ জন ছিলাম। নিজেদের হ্যাজাক জ্বেলে কোনও মতে আলোর ব্যবস্থা করতে হল। দলে বারি না হলে সেখানে চুরি ছিনতাইয়ের হ্যাপাও রয়েছে যে!” স্থানীয় বাসিন্দা সুনীতা দাস বলেন, “দেহগুলি ঠিকমতো পোড়ানো হয় না। এলাকায় দূষণ ছড়ায়। প্রায়শই দুর্গন্ধ।”
এ ব্যাপারে সুজাপুর কুমারপুর পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের সফিকুর রহমান বলেন, “পঞ্চায়েতের টাকা না থাকায় শ্মশানে আলোর কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি। মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট যাচাই করতে যে কর্মীর প্রয়োজন তা পঞ্চায়েতে নেই। যদি তবে কোনও পরিবারের ‘বার্ন সার্টিফিকেট’ দরকার হয়, সে ক্ষেত্রে শ্মশানে নিযুক্ত ডোম নিশ্চিত ভাবে জানালে তবেই আমরা সেই সার্টিফিকেট দিই।” তা হলে শ্মশানে শেষ কথা বলছেন ডোম?
রামনগর বাছরার পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের সত্যনারায়ণ রায় ফিরিস্তি দিয়েছেন, “রামনগর এবং বিধুপাড়া এই দু’টি বড় শ্মশানে বড় ঘর এবং শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ করা হয়েছে। তবে আমার পঞ্চায়েতে স্থায়ী নির্মাণ সহায়ক না থাকায় ওই কাজে দেরি হচ্ছে।” কবে কাজে হাত পড়বে? যথারীতি সে জবাব সত্যনারায়ণবাবুর কাছে মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.