বাস উল্টে তার তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হল কন্ডাক্টরের। দুই শিশু ও মহিলা-সহ জখম হয়েছেন ৪২ জন। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের উলসপুর-সংলগ্ন ন্যাতরা বটতলায়। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ২৪ জনকে। ২ জনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোতুলপুর-আরামবাগ রুটের লোকাল বাসটি আরামবাগের দিকে যাচ্ছিল। কামারপুকুরের চটি স্টপ পেরনোর পরেই গতি হঠাৎ বাড়িয়ে দেয়। যাত্রীরা অভিযোগ, আপত্তি করলেও তা কানে তোলেননি চালক। বেপরোয়া গতিতে বাসটি অন্যান্য গাড়িকে ওভারটেক করতে থাকে। বেলা ১২টা নাগাদ ন্যাতরা বটতলার কাছে একটি লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিন পাক খেয়ে উল্টে পড়ে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারের কাজ শুরু করেন। পুলিশ জানায়, বাসের কন্ডাক্টর বিধান লাহা বাসের তলায় চাপা পড়েন। গোঘাটেরই বৈতল গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। গোঘাটের বহরাশোল গ্রামের মহম্মদ সফিকুল মল্লিক ও তাঁর ভাই মহম্মদ ইব্রাহিম মল্লিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যালে। |
বাস যাত্রীদের মধ্যে ধনেখালির বাসিন্দা আসিফউদ্দিন নায়েক বলেন, “সম্পূর্ণ গাড়ির চালকের দোষে দুর্ঘটনা ঘটল। কামারপুকুর চটিতে অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করল। তারপর পিছন থেকে একই রুটের অন্য গাড়িগুলিকে আসতে দেখে হঠাৎই গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিল। যাত্রীদের চেঁচামিচি কানেই তুলল না।” বাসের চালক পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার পরে জখম যাত্রীদের একে একে আনা হয় হাসপাতালে। তাঁদের বাক্স-প্যাঁটরা, মোবাইল, টাকার ব্যাগ-সহ বিভিন্ন জিনিস স্থানীয় বাসিন্দারাই এসে জমা দিয়েছেন হাসপাতালের ওয়াড মাস্টারের ঘরে। আমিরুল হক নামে এক স্থানীয় যুবক হাতে একটা সুটকেস নিয়ে আসছিলেন হাসপাতালের দিকে। বললেন, “পুলিশ আসতে দেরি হচ্ছে। মালপত্র লুঠপাট হয়ে যেতে পারে। সে কারণে আমরা যতটা পারি জিনিসপত্র উদ্ধার করে আনছি।” স্থানীয় মানুষের এই ভূমিকার প্রংশসা করেছেন পুলিশ কর্তারা। |