সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক অভয় ঘোষকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে সাদা পোশাকের পুলিশ উত্তরপাড়ার জিটি রোড থেকে তাঁকে ধরে।
জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “ধৃত নেতার বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ, মারধর-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” অভয়বাবুর খোঁজে বিভিন্ন সময়ে গুজরাত, ত্রিপুরা, ওড়িশাতেও পাড়ি দিয়েছে হুগলি পুলিশ।
|
অভয় ঘোষ। নিজস্ব চিত্র |
দলীয় রাজনীতিতে অভয়বাবু আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসুর অনুগামী বলেই পরিচিত। অনিলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে উত্তরপাড়া থানায় গিয়েছিলেন আমাদের নেতারা। সেখানেই গ্রেফতার করা হয় ওঁকে। যদিও নির্দিষ্ট কোন মামলায় তাঁকে ধরা হল, পুলিশ জানাতে পারেনি। নিয়মরীতির তোয়াক্কা না করেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত আবার বলেন, “অভয় ঘোষ গ্রেফতার হওয়ায় এ বার পুলিশি তদন্তে গড়বেতার মতোই গোঘাটেও আমাদের অনেক নিখোঁজ কর্মীর কঙ্কাল মিলবে।” তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, আদালতে দায়ের করা নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে ধৃত নেতার বিরুদ্ধে। ২০০৬ সালে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গোঘাটে তিন জনকে সিপিএম পার্টি অফিসে ডেকে এনে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০০০-২০০১ সালে গোঘাটে একাধিক রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযুক্ত অভয়বাবুর বিরুদ্ধে মামলা ফের চালু করার আবেদন জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। চমকাইতলা-কাণ্ড এবং ‘গ্রাম দখলের’ নানা ঘটনায় অভয়বাবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। সে সব খতিয়ে দেখে তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই গোঘাটের কর্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা অভয়বাবু পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এলাকা ছাড়েন। তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গোপন ডেরায় থাকতেন। ২০১০ সালে দলীয় সম্মেলনে তাঁকে ‘দলবিরোধী’ কাজের অভিযোগে জোনাল সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত করা হয়। যদিও গ্রাম ছাড়ার দিন পর্যন্ত গোঘাট সিপিএমের তিনিই ছিলেন শেষ কথা। |