জননেতার উদ্দেশে ফের উড়ে এল জুতো! এ বার নিশানা রাহুল গাঁধী।
উত্তরাখণ্ডে আজ ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন রাহুল। হঠাৎ তাঁকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়ে এক যুবক। নাম কুলদীপ। রাহুলের গায়ে অবশ্য জুতো লাগেনি। রাহুলের প্রায় ১০ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে। তবে কেন জুতো ছুড়েছিল কুলদীপ, কী তার ক্ষোভ, এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। জেরা চলছে। যদিও সেই অনুসন্ধান পর্যন্ত অপেক্ষাও করেনি কেউই। বরং জুতোর ‘ছুতোয়’ শুরু হয়ে যায় রাজনীতি। কংগ্রেসের কথায়, “উত্তরাখণ্ডে ডাহা হারবে বিজেপি। তাই রাহুলের সভা দেখে ভয় পেয়েছে। লোক পাঠিয়ে জুতো ছুড়িয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত হোক।” বিজেপি-র বক্তব্য, “ছেলেটি আমাদের কেউ নয়। হতে পারে এটা সহানুভূতি কুড়োতে কংগ্রেসেরই কারসাজি। তাই আমরাও তদন্ত চাই।”
|
রাহুলকে জুতো ছোড়ায়
অভিযুক্ত কুলদীপ |
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, জুতো ছোড়ার ঘটনা ইদানিং প্রায় জলভাত হয়ে গিয়েছে। ইরাকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশকে জুতো ছুড়ে দেশে জনপ্রিয় হয়েছিলেন সাংবাদিক মুনতাদার আল জায়েদি। পরে এ দেশে কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পি চিদম্বরমকে লক্ষ্য করে জুতো ছুঁড়েছিলেন হিন্দি দৈনিকের সাংবাদিক জার্নেল সিংহ। এই দু’জনেরই ক্ষোভের ‘সুনির্দিষ্ট কারণ’ ছিল। এবং দু’জনেই জুতো ছুড়ে কার্যত ‘হল অব ফেম’-এ চলে গিয়েছেন। কিন্তু তার পর থেকে জুতো ছোড়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত শনিবার টিম অণ্ণার সদস্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়েছিল কিষাণলাল নামে এক যুবক। কিন্তু কেন, কী কারণে তারা জুতো ছুড়ছে, কার্যত সেই বিষয়টিই লঘু হয়ে গিয়েছে। শুধু জুতো নয়, ইদানিং চড় মারা, কালি ছেটানোর ঘটনাও ঘটছে। অথচ ২৪ ঘণ্টা পর কোনও ঘটনার অভিযুক্ত সম্পর্কে কেউ কোনও খোঁজ রাখছে না। বরং তাৎক্ষণিক ভাবে স্রেফ গুরুত্ব পাচ্ছে সেই ঘটনা ঘিরে রাজনীতি।
আজও তার অন্যথা হয়নি। উত্তরাখণ্ডের বিকাশনগরে নির্বাচনী প্রচার সভায় রাহুলকে উদ্দেশ্য করে জুতো ছোঁড়ার ঘটনাটি ঘটে আজ বিকেলে। অল্পের জন্য রাহুলের গায়ে লাগেনি জুতোটি। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গেই ওই যুবককে গ্রেফতার করে। রাহুল অবশ্য ওই যুবককে মারধর না করার জন্য নিরাপত্তাকর্মী ও দলীয় কর্মীদের অনুরোধ করেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ওকে মেরো না।” তার পরেই তাঁর বক্তৃতায় রাহুল বলেন, “ছোড়ো, ছোড়ো, আর একটা জুতো ছোড়ো! কিন্তু এ ভাবে জুতো ছুড়ে রাহুল গাঁধীকে কেউ রুখতে পারবে না।” স্বাভাবিক ভাবেই রাহুলের এই মন্তব্যের পরে বিজেপি-র বিরুদ্ধে আক্রমণ শাণাতে উৎসাহিত হয়ে নেমে পড়েন কংগ্রেস
নেতারা। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও টুইট করেন, ‘রাহুল যে বলেছেন, ছোড়ো, ছোড়ো, আর একটা জুতো ছোড়ো এই মন্তব্যটা ভাল লেগেছে।” দু’বছর আগে শ্রীনগরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ওমরকে লক্ষ্য করে চটি ছুড়েছিলেন এক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ। |
পাদুকা-পুরাণ |
১২ নভেম্বর, ২০১১
বরুণ গাঁধীকে চটি ছোড়েন দলের সদস্যরাই |
৬ জুন, ২০১১
সাংবাদিক সেজে এক ব্যক্তি জুতো ছোড়েন কংগ্রেস মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদীকে। |
১৫ অগস্ট, ২০১০
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে লক্ষ্য করে জুতো। |
২৮ এপ্রিল, ২০০৯
বিজেপি-র মিছিলে চটি ইয়েদুরাপ্পাকে। |
১৬ এপ্রিল, ২০০৯
লালকৃষ্ণ আডবাণীকে চটি ছোড়েন বিজেপিরই এক সদস্য। |
৭ এপ্রিল, ২০০৯
চিদম্বরমকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন সাংবাদিক জার্নেল সিংহ |
|