মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে আপনারাই তো বিপদে পড়ে গিয়েছেন!
জলে ভিজে জবুথবু দমকলকর্মীদের দেখে এমনই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া। রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার কালিকাপুরে এর পরেই নিজের গায়ের শাল ওই কর্মীকে দিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানের ছোটনীলপুরের বাসিন্দা, ওই দমকলকর্মী সৈকত মিত্র সোমবার বাড়িতে বসে বলছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন অপ্রত্যাশিত উপহার পেয়ে কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়েছে।”
বছর খানেক আগে দমকল বিভাগে চাকরি পেয়েছেন ছোটনীলপুরে শিয়ালডাঙার সৈকত। বর্তমানে তিনি কলকাতা দমকল কেন্দ্রের ফায়ার অপারেটর। রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার ইএম বাইপাসের পাশে কালিকাপুর বস্তিতে আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন তিনি। সৈকত জানান, প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন খানিকটা আয়ত্তে আসে। |
পাইপ দিয়ে জল ছেটাতে গিয়ে সর্বাঙ্গ ভিজে গিয়েছিল। শীতে কাঁপছিলেন অনেক কর্মীই। এমন সময়েই মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে পড়ে যান তাঁরা। সৈকত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে সোজা আমাদের দিকে এগিয়ে আসেন। বলেন, ‘এখনই গায়ে শুকনো কিছু না দিলে তো আপনাদের নিউমোনিয়া হয়ে যাবে’। এর পরেই নিজের শাল খুলে আমার দিকে এগিয়ে দেন।” তিনি জানান, অন্য দুই দমকল কর্মী উজির মহম্মদ আর গণেশ দেবনাথের জন্যও ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই শাল জোগাড় করে দেন মমতা। সৈকতের কথায়, “সেই শাল গায়েই ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচি আমরা তিন জন।”
সোমবার এক দিনের জন্য শিয়ালডাঙার বাড়িতে এসেছিলেন সৈকত। তিনি বলেন, “এই শালটা সারা জীবন রেখে দেব। এই অপ্রত্যাশিত উপহার পেয়ে আমার কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়েছে। এখন থেকে যেখানেই আগুন নেভাতে যাব, মুখ্যমন্ত্রীর উপহারের কথা মাথায় রাখব।”
বর্ধমানের দমকল কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কর্মীদের এমনি করে জলে ভিজে, শীতে কেঁপে আগুন নেভাতে হয়। অনেক সময়েই প্রাণের ঝুঁকি থাকে। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে এক দমকল কর্মীকে নিজের শাল দিয়ে সম্মান জানিয়েছেন তাতে আমরাও গর্বিত।” |