নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়ূরেশ্বর |
প্রশাসন ‘উদাসীন’। যার জন্য ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না। যানবাহন তো বটেই, মানুষ চলাচলেরও অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তা দুটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বার বার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনও কাজ হয়নি। এলাকাবাসীরা কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তা দু’টিতে যাতায়াত করছেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোটাসুর-রামনগর সড়কটি বীরভূম-মুর্শিদাবাদের অন্যতম যোগসূত্র। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত থেকে শুরু করে জীবন-জীবিকার বিভিন্ন প্রয়োজনে দুই জেলার বাসিন্দাদের অন্যতম ভরসা রাস্তাটি। কিন্তু বহুদিন ধরে সঠিক সংস্কারের অভাবে রাস্তাটির হাল শোচনীয়। তার উপর নিয়মাতিরিক্ত পরিমাণ বালি বোঝাই ট্রাক চলাচলের ফলে রাস্তার অধিকাংশ অংশ খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। মুর্শিদাবাদের পানুটিয়ার সন্তোষ দাসের অভিযোগ, রাস্তার বেহাল দশার কারণে এমনিতেই রুটের বেশ কিছু বাস চলাচল বহুদিন বন্ধ হয়ে আছে। তা ছাড়া মাঝে মধ্যেই খারাপ রাস্তার জন্য বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। উলকুন্ডা পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের রামমোহন প্রামাণিক প্রশাসনের দিকে অভিযোগ করে বলেন, “এলাকাবাসীরা আবেদন-নিবেদন থেকে পথ অবরোধ এমনকি অনশন করলেও, রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি।”
একই দুরাবস্থা শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়কেরও। সংস্কারের অভাবে ১৯ কিমি ওই রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় পিচ-পাথর উঠে গিয়েছে। অথচ ওই রাস্তাটিই এলাকাবাসীদের রামপুরহাট-তারাপীঠের মত, মহকুমার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের একমাত্র সম্বল। রামপুরহাটে মহকুমাশাসকের দফতর কিংবা হাসপাতাল-আদালতের প্রয়োজনে তাঁদের কাছে রাস্তাটির গুরুত্ব অপরিসীম। বাসকর্মী ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় কনুটিয়ার বাসিন্দা গোপাল গাউস বলেন, “এই রাস্তায় যাতায়াত করা করা মানেই প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া। যেকোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।” সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর- ২ নং ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতো বলেন, “রাস্তা দু’টির অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ। সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সিপিএমের পঞ্চানন ভট্টাচার্য বলেন, “আর্থিক সঙ্গতির অভাবে জেলার বেশ কিছু রাস্তা সংস্কার করা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।” বেহাল সড়ক দু’টির প্রসঙ্গে জেলা পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জাহ্নবী কোনোরের দাবি, “কোটাসুর-রামনগর সড়কটি সংস্কারের কাজ চলছে। ওটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য রাজ্যস্তরে প্রস্তাব পাঠানো হবে। শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়কটির সংস্কারের জন্যও ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই সংস্কারের ব্যবস্থা হবে।” |