সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসছে রাজ্যের পর্যটন দফতর। এমনই জানিয়েছেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তিনি জানিয়েছেন, এলাকার শ্রেষ্ঠ প্রতিমা, আলো, শোভাযাত্রা এবং মণ্ডপ ও পরিবেশ বিভাগে প্রথম তিন স্থানাধিকারীকে ওই দফতর পুরস্কার দেবে।
কালনায় সব চেয়ে বড় উৎসব এই সরস্বতী পুজো। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো পুজো হয়। তিন দিন ধরে পুজো চলে। কোথাও বা আবার পুজোর অনুষ্ঠান গড়ায় চার দিনে। মাস দুয়েক আগে থেকেই শুরু হয় পুজোর প্রস্তুতি। সারা রাত ধরে চলে কাজ। পুজোর প্রথম দিন থেকেই পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। সারা বছর যে গ্রামগুলিতে সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকার, এই উৎসবের সময়ে সেখানে ঝলমলে আলো। অথচ কালনার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এত বড় উৎসবের কোনও প্রচারই নেই বাইরে।
মাস তিনেক আগে কালনায় পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে এসেছিলেন পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিংহ। তখনই তাঁকে কালনার মানুষের ক্ষোভের কথা জানান বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু। তিনি জানান, সেই সময়েই এই পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। বিধায়ক জানান, এ জন্য কয়েক জন আধিকারিককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন হবে। তার সদস্যেরা বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ ঘুরে একটি তালিকা তৈরি করবেন। এর জন্য ২৮ জানুয়ারি কালনা শহরে হাজির থাকবেন পর্যটন দফতরের ডিরেক্টর। ৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পর্যটন দফতর পুরস্কার দেবে শহরের পুরশ্রী মঞ্চে। সেখানে হাজির থাকতে পারেন পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিং।
মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি অবশ্য জানান, এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও চিঠি তাঁর কাছে এখনও আসেনি। বিধায়কের দাবি, “ইতিমধ্যেই পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, মহাকরণে এ বিষয়ে কথা বলবেন।” শুধু পুরস্কার নয়, এলাকার মানুষের দাবি মেনে পুজো উপলক্ষে একটি বিশেষ ট্রেনের আর্জিও পর্যটন মন্ত্রীর কাছে জানিয়েছিলেন বিধায়ক। মন্ত্রী সে বিষয়েও পদক্ষেপ করেছেন বলে জানান বিধায়ক। তিনি আরও জানান, হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম-কে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরামর্শে আর একটি চিঠি পাঠানো হচ্ছে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে। এই চিঠির সঙ্গে থাকছে পর্যটন মন্ত্রী ও পুরমন্ত্রীর সুপারিশ। বিধায়কের বক্তব্য, “পুজো উপলক্ষে ‘সরস্বতী স্পেশাল’ নামের একটি ট্রেন হাওড়া থেকে ছাড়লে প্রচার পাবে কালনার এই উৎসব।”
পর্যটন দফতরের উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি কালনার পুজোকর্তারা। তাঁরা জানান, সরকারি দফতর পুরস্কার দিতে এলে ক্লাবগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। তার সুফল পাবেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে পুজোর সময়ে আচরণবিধি সংক্রান্ত বিষয়ে ৪৮টি ক্লাবের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছে কালনা থানা। উপস্থিত ছিলেন মহকুমা থানার বিভিন্ন কর্তা, মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি, দমকল বিভাগের আধিকারিক-সহ বেশ কিছু প্রশাসনিক কর্তা। বৈঠকে কালনা থানার তরফে একটি আচরণবিধি ও দর্শকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত লিফলেট বিলি করা হয়। |