পুলিশের গাড়িতে বোমা ছোড়া ও আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে তৃণমূলের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। রবিবার কেতুগ্রাম থানা এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কমরেড শেখ। সোমবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে এসিজেএম এজলাসে তোলা হলে বিচারক তাকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এর আগে শুক্রবার কেতুগ্রামের বামুনডিহি গ্রামের আরও এক দুষ্কৃতী সোহেরাব শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশের গাড়িতে বোমাবাজি, বাইক ছিনতাই-সহ চারটি অভিযোগ রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে ধৃতের কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার, একটি পাইপগান ও একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করেছে। মিলেছে কিছু কার্তুজও।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা সাউদ মিয়াঁর ভাই কেবির মিয়াঁকে গ্রেফতার করতে পুলিশ বামুনডিহি গ্রামে যায়। কেবির মিয়াঁকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় খলিপুর গ্রামের কাছে রাস্তায় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা, ইট ছোড়া হয়। পুলিশ কর্মীদের রাইফেলও ছিনতাই করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল তৃণমূল কর্মী কমরেড শেখ। |
কেতুগ্রাম থানার আইসি আব্দুর গফ্ফর বলেন, “কান্দরামুখী একটি বাসে কোমরপুর যাচ্ছিল কমরেড। খবর পেয়ে পুলিশ কেতুগ্রামে বাসটিকে আটকায় ও ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে।” এ ছাড়াও কমরেডের বিরুদ্ধে সিপিএমের তিন কর্মীকে খুনের মামলাও রয়েছে। তবে ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়েছে কমরেড। অন্য দিকে, কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা সাউদ মিয়াঁও বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
এ দিকে, শুক্রবার দুপুরে কেতুগ্রামের বামুনডিহি গ্রামে ধৃত দুষ্কৃতী সোহেরাব শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েক মাস আগে তৃণমূল নেতা অপরূপ শেখকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও ছিল। অপরূপ জেলে থাকার সময় বামুনডিহি গ্রামের সোহেরাব দলবল নিয়ে অপরূপের বাড়িতে হানা দেয়। অভিযোগ, জমির ধান কাটতে দেব না হুমকি দিয়ে সোহেরাব ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে ৪১ হাজার টাকা তোলা আদায় করে।
সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য ফারুক মির্জার দাবি, “ধৃত দুই দুষ্কৃতীই শাসক দলের মদতে এলাকায় অশান্তি তৈরি করছিল। ওরা ধরা পড়ায় এলাকার মানুষ খুশি হবেন।” সোহেরাব প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতারা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে কমরেড শেখ তাঁদের দলের কর্মী বলে জানিয়েছেন কেতুগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রত্নাকর দে। তাঁর দাবি, “বাম জমানায় মিথ্যা অভিযোগে আমাদের কর্মীকে ফাঁসানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁকে ধরল। কারণ আমাদের সরকার পক্ষপাতিত্ব করছে না।” |