রেলপথ দিয়ে পরিবহণের সময়ে দেদার চুরি হচ্ছে কয়লা। সোমবার আসানসোলে এমনই দাবি করলেন এডিসিপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
গত মাসখানেকের মধ্যে পরপর কয়েকটি কয়লা বোঝাই গাড়ি আটক হওয়ার পরে আসানসোল খনি এলাকায় অবৈধ কয়লার কারবার ফের শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার গভীর রাতে জামুড়িয়ার কুনস্তরিয়া এরিয়ায় পুলিশের গাড়ির সঙ্গে সামান্য ধাক্কার পরে উল্টে যায় একটি কয়লার লরি। এই ঘটনার পরে স্থানীয় সিআইএসএফ ক্যাম্পে বিক্ষোভ দেখান এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকা দিয়ে প্রকাশ্যে বেআইনি ভাবে কাটা কয়লা পরিবহণ হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার। এ নিয়ে সরব হয় রাজনৈতিক দলগুলিও। |
এ দিন রানিগঞ্জে কয়লা চুরির অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রায় পাঁচ টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। এডিসিপি জানান, খনি অঞ্চল থেকে মালগাড়িতে করে বাঁকুড়ার মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা যাওয়ার সময়ে বল্লভপুরের কাছে তা চুরি করছে দুষ্কৃতীরা। ওই এলাকায় রেলের নিয়ম মেনে মালগাড়ির গতি কমাতে হয়। তখনই চোরেরা কয়লা নামিয়ে নেয় বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “বছর তিনেক আগে এক মালগাড়ির চালক ও গার্ডের বিরুদ্ধে কয়লা চুরির ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও গঠন হয়েছে।” এডিসিপি আরও জানান, নারায়ণকুড়ির খোলামুখ খনি থেকে সাইডিংয়ে কয়লা পরিবহণের সময়েও ডাম্পার থেকে চুরি হচ্ছে। এ দিন বিভিন্ন এলাকার ছবি দেখিয়ে তিনি দাবি করেন, যে সব জায়গায় অবৈধ খনন চলছে তা দুর্গম। রাতে ওই সব এলাকায় কয়লা কাটতে নামছে বহু মানুষ। পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ইসিএলের সঙ্গে অবৈধ খনি ভরাট করা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে বলে তিনি জানান।
এডিসিপি-র বক্তব্য প্রসঙ্গে সিপিএমের অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, “এই সব দাবি হাস্যকর। প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষের চোখের সামনে কয়লা কারবার চলছে। চোরাই কয়লা পরিবহণ বন্ধ করলেই অবৈধ কারবারের রমরমা কমবে।” আসানসোলের আরপিএফের আধিকারিক অমলেশ কুমার বলেন, “তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা চুরির কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে করেননি।” রেলের এক আধিকারিকের অভিযোগ, “পুলিশ কয়লা কারবারের রমরমা থেকে নজর ফেরানোর জন্য আগেও রেলের উপরে দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। এখনও তা করছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যে কয়লা নিয়ে যায় তা পাহারার জন্য সিআইএসএফ থাকে।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়লা চুরি চলছে। তা থামাতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। তবে স্থানীয় পুলিশের এ ব্যাপারে আরও বেশি সজাগ থাকা উচিত।” |