শালি নদীর উপরে গোস্বামীগ্রামে সেতুর দাবি
কটি সেতু তৈরি হলেই বদলে যাবে আশপাশের ২৫টি গ্রামের অর্থনীতি। যোগাযোগের জন্য রাস্তা তৈরির সমস্যাও মিটে যাবে। তাই শালি নদীর উপরে গোস্বামীগ্রামের ঘাটে সেতু তৈরির দাবিতে সরব হয়েছেন বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা।
বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েতের গোস্বামীগ্রামে শালি নদী পারাপারের জন্য প্রায় ৩০০ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট চওড়া একটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়েই এলাকার স্কুলপড়ুয়া থেকে গ্রামবাসীসকলকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছরের অধিকাংশ সময়েই মূলত পাত্রসায়র ব্লকের বেলুট-রসুলপুর ও হামিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। তবে বর্ষার সময়ে ওই বাঁশের সাঁকো প্রায় প্রতি বছরেই ভেসে যায়। তখন দুর্ভোগে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। কোনও রকমে একটি নৌকায় নদী পেরোতে হয়। ফলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবে নদী পার হওয়ার ব্যাপারটি রয়েই যায়।
বেলুট-রসুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শালখাঁড়া, মামুদপুর, ভগিৎপুর, দেউলি, গোস্বামীগ্রাম, বীজপুর এবং কাজিরডাঙা ও হামিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপাড়া, চর-গোবিন্দপুর, নেত্রখণ্ড, টাসুলি ও ঘোড়াডাঙা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা পেশায় চাষি। চাষের উপরেই মূলত নির্ভরশীল তাঁরা। ফলে উৎপন্ন ফসল জমি থেকে বাড়িতে বা বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়।
এ ভাবেই চলে সাঁকো পারাপার। ছবি: দেবব্রত দাস।
পাত্রসায়র ব্লকের শালখাঁড়া গ্রামের বাসিন্দা কান্তি খাঁ, মহাদেব ঘোষ অথবা দেউলি গ্রামের বাসিন্দা তাপস দলুইয়ের বক্তব্য, “সেতু নেই। তাই যাতায়াতের সুবিধার জন্য গ্রামের মানুষেরা বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছি। সেতু না থাকায় গ্রামে বড় গাড়ি ঢুকতে পারে না। পিচ রাস্তাও তৈরি হচ্ছে না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ফসল কিনতে গ্রামে আসতে চায় না। ফলে আমাদের মতো চাষিদের লোকসান হচ্ছে।”
শালখাঁড়া গ্রামের বাসিন্দা মিলন বাগদি, উত্তম বাগদিদের ক্ষোভ, “জলের তোড়ে ফি-বছর ওই বাঁশের সাঁকো ভেসে যায়। তখন আমরা ব্লক সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। নিদারুণ কষ্টে দিন কাটে। তাই আমরা বহু দিন ধরে সেতুর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের টনক নড়েনি।” শালখাঁড়া গ্রামের বাসিন্দা তথা বীজপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তরুণ ঘোষ, বিক্রম ঘোষদের ক্ষোভ, “আমাদের মতো পড়ুয়া-সহ প্রায় হাজারখানেক মানুষ রোজ প্রয়োজনের তাগিদে ওই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হন। বর্ষায় জলের তোড়ে ওই সাঁকো ভেসে গেলে আমরা আর স্কুলে যেতে পারি না। এত অসুবিধা সত্ত্বেও প্রশাসন একটা সেতু তৈরি করে দেয়নি।”
গ্রামবাসীর অভিযোগকে সমর্থন করেছেন বেলুট-রসুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের রাম দুয়ারী। তিনি বলেন, “গোস্বামীগ্রামের ঘাটে শালি নদীর উপরে একটি পাকা সেতু তৈরি হলে আশেপাশের ২৫টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। প্রশাসনের কাছে বহু বার সেতুর দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু এত দিনেও কোনও সেতু তৈরি হয়নি।” এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কিছু দিন আগেই ওই এলাকার মানুষ আমাদের দলের স্থানীয় বিধায়ক দীপালি সাহার কাছে সেতু তৈরির দাবি জানিয়েছেন। আমরাও চাই, ওখানে একটা সেতু তৈরি হোক। তা হলে যাতায়াতের সুবিধা হবে।”
সোনামুখীর বিধায়ক দীপালি সাহা বলেন, “এলাকার বাসিন্দারা সেতুর দাবি করেছেন। সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শালি নদীর উপরে কয়েকটি সেতু তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছি।” পাত্রসায়রের বিডিও সমীরণকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “ওই এলাকায় সেতু তৈরির যে দাবি স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.