পর্যটকদের ফেলা আবর্জনায় ভরে উঠেছে লালবাগ চত্বর
পিকনিক করতে এসে পর্যটকদের ফেলা যাওয়া নোংরা-আবর্জনায় ভরে উঠেছে লালবাগ কেল্লা নিজামত চত্বর ও পাহাড় বাগান এলাকা।
দক্ষিণ দরজা ও সাদা মসজিদের মাঝখানের বিস্তৃত কেল্লা নিজামত চত্বর থেকে পাহাড় বাগান এলাকা জুড়ে এঁটো শালপাতা থেকে থার্মোকলের বাসন-বাটি-গ্লাস, আনাজপাতির খোসা ও মুরগির পালক থেকে যাবতীয় আবর্জনার স্তূপ পড়ে রয়েছে। ওই এলাকার গা লাগোয়া রয়েছে ঐতিহাসিক ওয়াসিফ মঞ্জিল বা নিউ প্যালেস এবং সাদা মসজিদ। কিন্তু ওই নোংরা-আবর্জনা সাফসুতরো করার ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ পুরসভার কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
পুরপ্রধান সৌমেন দাস অবশ্য বলেন, “শনি ও রবিবার ছুটির দিন ছাড়া বাকি দিনগুলিতে ওই এলাকা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু পর্যটন মরসুমে প্রতি দিন সকাল থেকে পর্যটকদের গাড়ি ওই এলাকা দখল করে থাকায় পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও সাফাই কর্মীদের অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও পর্যটকদের স্বার্থে ওই এলাকা আমরা নিয়মিত পরিষ্কার করে থাকি।”
নিজস্ব চিত্র
পুর-কর্তৃপক্ষের ওই কথার সঙ্গে কাজের যে অমিল রয়েছে, তা পুরবাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললেই টের পাওয়া যায়। স্থানীয় সিংঘী হাইস্কুলের শিক্ষক মহম্মদ আলি বলেন, “কেল্লা নিজামত চত্বরে অবিলম্বে পিকনিক ও গাড়ি পার্কিং বন্ধ হওয়া উচিত। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া উচ্ছিষ্ট-নোংরার কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হয়ে রয়েছে। ফলে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও ওই এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু তা শুনছে কে?”
দক্ষিণ দরজা থেকে ওয়াসিফ মঞ্জিল যাওয়ার পথে ঘন্টা ঘর থেকে সাদা মসজিদ পর্যন্ত বিস্তৃত ফাঁকা জায়গায় পর্যটকরা পিকনিক করে থাকেন। ওই চত্বরে জায়গা না হলে পর্যটকেরা পিকনিক করার জন্য বেছে নেন পাহাড় বাগান এলাকা। এই জায়গাগুলি ছিল মুর্শিদাবাদ এস্টেটের অধীনে। সেই সময়ে গাড়ি পার্কিং ও পিকনিক করার জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত তারা। তখনও ওই এলাকা পরিষ্কার করা নিয়ে পুরসভা ও মুর্শিদাবাদ এস্টেটের মধ্যে চাপানউতোর চলত। মাঝে পড়ে ভোগান্তি হত পর্যটকদের।
বছর খানেক আগে জুডিসিয়াল দফতর ওই এলাকা পর্যটন দফতরকে হস্তান্তর করে। এর ফলে ওই এলাকা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে পুরসভার অনীহা রয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে কেল্লা নিজামত চত্বর থেকে পাহাড় বাগান এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় দিনের পর দিন নোংরা-আবর্জনা ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে দূষিত হচ্ছে এলাকা। আর তার মধ্যেই চলছে পর্যটকদের পিকনিক। এদিকে ওই এলাকা পরিষ্কারের দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ী সমিতি পরিচালিত ‘পর্যটক সহায়তা কেন্দ্রে’ পর্যটকদের ভুরিভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে।
ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “লালবাগের পাহাড় বাগান এলাকায় ছিল নবাবদের তৈরি করা কৃত্রিম পাহাড়। ফোয়ারার মাধ্যমে সেই পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসত জলের ধারা। বাহারি গাছ আর রকমারি ফুল দিয়ে তৈরি বাগানও আমাদের ছেলেবেলায় দেখেছি। গোটা পাহাড় এলাকা লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা ছিল। তার মধ্যে ছিল বেলজিয়াম পাথরের তৈরি মূর্তি। এখন সেই সব ইতিহাস! কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে পর্যটকদের কাছে এলাকাটি মনোরম হয়ে উঠবে। কিন্তু তাও হচ্ছে না। পুরসভা ও প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.