কালিয়াচকের একটি গ্রামে বড় মাপের অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিশ পেল পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ৫০টি শক্তিশালী সকেট বোমা, ২০টি হাত বোমা, একটি মাসকেট বন্দুক, ৫০ কেজি বোমা তৈরির মশলা। শনিবার সকালে কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জের ঘোষটোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। বস্তায় করে ঝোপের আড়ালে ওই অস্ত্রশস্ত্র রাখা ছিল বলে পুলিশ জানাচ্ছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, অস্ত্র ভান্ডারটি সিপিএমের। ওই এলাকায় দুজন সক্রিয় সিপিএম কর্মীর ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। সিপিএম অবশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলীয় কর্মীদের নাম জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করেছে। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “বিপুল পরিমাণে বোমা, বোমা তৈরির মশলা, একটি মাসকেট বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। কারা তা মজুত করেছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকায় তল্লাশিও চালানো হচ্ছে।”
কংগ্রেসের অভিযোগ, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা বলেন, “কালিয়াচকে সিপিএমের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। এলাকায় সিপিএমের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে।” তিনি জানান, ডিসেম্বর মাসে সিপিএমের হামলায় কংগ্রেস কর্মী সফিকুল শেখ জখম হয়েছিলেন। গত শুক্রবার তিনি মারা যান। কংগ্রেস কর্মীদের উপর হামলার জন্যই অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হয়েছিল।
এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “ওই এলাকায় লুঠপাঠ, সংঘর্ষ চলছে। কয়েকদিন আগে দুষ্কৃতীরা পুলিশকে অপহরণ করে রাইফেল ছিনতাই করা হয়। এলাকার মানুষ প্রশাসনের উপর ভরসা করতে পারছে না। এলাকায় কেউ অস্ত্র চালাচ্ছেন। কেউ আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র রাখছে। ওই এলাকা থেকে বোমা, অস্ত্র উদ্ধার তো হবেই। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই।” তাঁর অভিযোগ, “ইতিমধ্যে কংগ্রেস ৪০ জন সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। জেলা পুলিশ-প্রশাসনকে বহুবার বললেও কোনও লাভ হয়নি।”
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসে ঘোষটোলা গ্রামে কংগ্রেস-সিপিএম সংঘর্ষে কংগ্রেসের সফিকুল শেখ মারাত্মকভাবে জখম হওয়ার পর তাঁকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার তিনি মারা যান। মৃতদেহ গ্রামে ফিরলে ফের গোলমাল শুরু হতে পারে, এই আশঙ্কায় সকাল থেকেই বিরাট পুলিশ বাহিনী গ্রামে মোতায়েন ছিল। কংগ্রেস কর্মীরা সফিকুল শেখকে কবর দেওয়ার পরেই পুলিশ গ্রামে তল্লাশি শুরু করে। এলাকার সিপিএম কর্মীর বাড়ির অদূরে বিপুল অস্ত্রের হদিস মেলে। |