দু’টি শিশুর মৃত্যু, বদলির নির্দেশ দুই হাসপাতালে
মা ও শিশুর প্রতি গাফিলতির এক-একটি অভিযোগ এবং তার পরেই এক-এক জন চিকিৎসকের বদলি!
স্বাস্থ্যকর্তারা সরাসরি এই দুইয়ের মধ্যে যোগাযোগের কথা স্বীকার না-করলেও দফতর সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের কড়া বার্তা দিতেই গত কয়েক দিনে কলকাতা ও জেলায় পরপর কয়েক জন চিকিৎসকের পদ পরিবর্তন ও বদলির ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে প্রসূতি ও শিশুদের চিকিৎসায় কোনও ফাঁক থাকলে তা যে হালকা ভাবে নেওয়া হবে না, সেটাই বুঝিয়ে দিতে চাইছে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য দফতর। দিন কয়েক আগেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক গর্ভবতীকে জোর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বাড়ি ফেরার পথে রাস্তাতেই শিশুর জন্ম দেন মঙ্গলকোটের ওই প্রসূতি। পরের দিন, গত শুক্রবার শিশুটির মৃত্যু হয়। সে দিনই বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার গদাধর মিত্রকে সরিয়ে অসীতবরণ সামন্তকে ওই পদে বসানোর নির্দেশ জারি হয়। যদিও পরপর এই দুই ঘটনা নিতান্ত ‘কাকতালীয়’ বলে স্বাস্থ্যকর্তারা ও সদ্যপ্রাক্তন সুপার দাবি করেছেন।
এ দিন বর্ধমানে ঘটনার তদন্তে গিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা উপ-অধিকর্তা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সুপার নিজেই সরতে চাইছিলেন। উনি ভালমানুষ। সুপার পদে যে সব কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তা ওঁর পক্ষে সব সময় সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ওঁকে আমরা অব্যাহতি দিয়েছি।” গদাধরবাবুও বলেন, “ব্যক্তিগত কারণেই আমি সুপার থাকতে চাইছিলাম না। অনেক বার অব্যাহতি চেয়েছি। ঘটনাচক্রে সেটা এখন গৃহীত হল। তাই শিশুমৃত্যুর সঙ্গে একে জড়ানো হচ্ছে।” বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই হাসপাতালে আরও ছ’টি শিশুর মৃত্যু হয়। ডেপুটি সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় সপ্তাহ দু’য়েক আগেই বি সি রায় শিশু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ ‘টাস্ক ফোর্স’। পরে কড়া রিপোর্ট দিয়ে তারা জানায়, রাতের ডিউটিতে কয়েক জন শিশু চিকিৎসককে সে দিন পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হলেও তাঁরা তা দেননি। এর পরেই অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক গৌতম দে ও মহুয়া রায়কে বদলি করা হয়। গৌতমবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ও মহুয়াদেবীকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। যদিও হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁরা ‘রিলিজ অর্ডার’ নিতে অস্বীকার করেছেন।
দু’টি ঘটনা প্রসঙ্গেই স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “রুটিন বদলি। এর মধ্যে অন্য গল্প খুঁজবেন না। ” কিন্তু বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চিকিৎসকদের বুঝতে হবে, সরকারি চাকরি মানে শুধু বসে মাইনে পাওয়া নয়। ফাঁকি দিলে শাস্তি পেতে হবে। আমার হাসপাতালে সেটাই হয়েছে। ডাক্তারদের হুঁশিয়ার থাকতে হবে।” যোগাযোগ করা হলে গৌতমবাবু ও মহুয়াদেবী দু’জনেই বলেন, “এখন কিছু বলতে পারব না। যা বলার, সামনের সপ্তাহে বলব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.