আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনকে ‘ব্যবহার’ না-করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছে আবেদন জানাল সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি। ওই ধর্মঘটের সমর্থনে এবং সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ পরিষদের সভা উপলক্ষে শনিবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে শ্রমিক সমাবেশ হয়। সেখানে এআইটিইউসি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে আবেদন, ধর্মঘটের বৈপরীত্যে প্রশাসনকে ব্যবহার করবেন না। পুলিশ ধর্মঘট করুক, তা বলছি না। কিন্তু পুলিশ যেন কারখানায় ধর্মঘট ভাঙতে না-যায়। জোর করে যেন বাস-ট্রাম চালানোর চেষ্টা না হয়। এটা আমাদের আবেদন। হুমকি নয়।”
আবেদনের পক্ষে গুরুদাসবাবুর যুক্তি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে বলতেন, মানুষের প্রতিবাদের অধিকার আছে। তা হলে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এখন সেই কথা ভুলে যাবেন কেন? তা ছাড়া, ওই ধর্মঘট রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতি এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে। মমতাদেবী বহু ব্যাপারে কেন্দ্রের বিরোধিতা করছেন। আমাদের ভাল লাগছে। ওঁকে এটাও বুঝতে হবে যে, ওই আর্থিক নীতির বিরোধিতা না করলে শিল্পায়ন হবে না। রাজ্যে কোনও জনকল্যাণমুখী পরিবর্তন উনি করতে পারবেন না।” ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় মমতাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন গুরুদাসবাবু। তাঁর কথায়, “আমি মমতাদেবীকে অনেক দিন ধরে চিনি। ওঁকে ফোন করে ধর্মঘটের দিনের মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছোনোর আর্জি জানিয়েছিলাম। তিনি সেই আর্জি রেখেছেন। তার জন্য এই সভা থেকে তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
তবে ওই ‘আবেদন’ এবং ‘ধন্যবাদ’টুকু ছাড়া এ দিন গুরুদাসবাবুর ভাষণের বাকি প্রায় সবটাই ছিল মমতা এবং তাঁর সরকারের প্রতি ‘কটাক্ষ’। যেমন, রাজ্য সরকারের শ্রমিক-নীতি, কৃষকের আত্মহত্যা, শিশুমৃত্যু, বড় পুঁজিপতিদের লোকপালের আওতায় আনার প্রস্তাবকে তৃণমূল সাংসদদের সমর্থন না করা ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে গুরুদাসবাবু বলেন, “আমি জানি সাত মাসে কোনও ম্যাজিক করে সার্বিক উন্নতি করা যায় না। আমাদের প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করাই উচিত। কিন্তু মর্নিং শোজ দ্য ডে!” |