ভেড়ি ভরাট করে নির্মাণের চেষ্টা আটকে দিলেন পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। পূর্ব কলকাতার নোনাডাঙা এলাকায় ১০ একরের ওই জলাভূমিটি পূর্ব কলকাতার অন্যান্য জলাভূমির সঙ্গেই রাজ্য সরকার আইন করে সংরক্ষিত ঘোষণা করে ২০০৬ সালে। প্রকাশ্যে এবং গোপনে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় বহু জলাভূমিই বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু তা আটকে দেওয়ার এত বড় উদ্যোগ এই প্রথম।
শনিবার সকালে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে কালেক্টর ভেড়ি নামে ওই জলাভূমির চারপাশ ঘিরে গড়ে তোলা পাঁচিল ভেঙে দেন। দেখা যায়, ইতিমধ্যেই ভেড়ির জল তুলে প্রায় শুকিয়ে ফেলা হয়েছে। অরিজিৎবাবু জানান, এটি রাজ্য সরকারের আইনানুগ ভাবে বিজ্ঞাপিত জলাভূমি। এর চরিত্র বদল করতে গেলে জেলাশাসকের অনুমোদন নেওয়ার পরে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তার কোনওটাই করা হয়নি। |
এই জলাভূমি ভরাট করার পিছনে কারা ছিল, তা জানা যায়নি। অরিজিৎবাবু বলেন, “পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে স্থানীয় কোনও নেতা বা দুষ্কৃতীর হাত নিশ্চয়ই আছে।” তিনি জানান, এই ভেড়িতে সমবায় পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সংসার চালাত প্রায় দু’শো মৎস্যজীবী পরিবার। তাদের হটিয়ে গত নভেম্বর থেকে ভেড়ির জল বের করে দিয়ে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হয়। তখন থেকে জলাভূমি কর্তৃপক্ষ জলা ভরাট বন্ধ করতে তৎপর হয় বলে অরিজিৎবাবু জানান।
পাঁচিল ভাঙতে কেন এত সময় লাগল? অরিজিৎবাবু বলেন, “তিলজলা থানার পুলিশকে বারবার লিখিত ভাবে জানিয়েছি। জেলা প্রশাসনকে জানাই। কাজ না-হওয়ায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং পুরসভার কমিশনারকে জানাই। তার পরেও সবাইকে একজোট করে পুরসভার বুলডোজার আর পেলোডার সংগ্রহ করে কাজ শুরু করতে সময় লেগে গেল।” এ বার ভেড়ির পাড় থেকে ইট-বালি-সিমেন্ট সরিয়ে ভেড়িতে জল ভরার কাজ শুরু করবেন তাঁরা। তার পর সেটি আবার মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। |