ভোটে উত্তরপ্রদেশ
কংগ্রেসের কোলাভেরি ঠেকাতে
বিজেপির পথনাটক

ভোট তো নয়, যেন দুগ্গাপুজো। পুজোতে থিম-যুদ্ধ পাড়ায় পাড়ায়। আর এখানে দলে দলে।
আগের লোকসভা ভোটে এ আর রহমানের ‘জয় হো’ গানটিকে প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিল কংগ্রেস। এ বারে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে ‘কোলাভেরি ডি’। গানের সুর অবিকল রেখে তার কথা বদলে গাঁয়ে-গঞ্জে প্রচার চালাতে চায় কংগ্রেস। তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানাই এখন মন্ত্র রাহুল গাঁধীর। তাই ‘কোলাভেরি ডি’-এর মতো যে গান যুবসমাজের মুখে মুখে, তার স্বত্ব কিনতে মরিয়া কংগ্রেস। দক্ষিণের প্রযোজক কস্তুরি রাজার সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে তারা। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বব্বর বলেন, “কোলাভেরি ডি ছাড়াও আরও কয়েকটি গানের সুর প্রচারে ব্যবহার করার ভাবনাচিন্তা চলছে। শীঘ্রই তা চূড়ান্ত হবে।” প্রচারের থিম খুঁজতে তিন-তিনটি পেশাদারি সংস্থার আশ্রয় নিয়েছে কংগ্রেস। তারা রাহুলের প্রচারকেই মাথায় রেখে এগোচ্ছে। তারাই প্রস্তাব দিয়েছে, রাহুল যখন তরুণ মনে দাগ কাটতে চাইছেন, এমন গানই বাছা হোক যেগুলি সেই প্রজন্মের মন ছুঁয়েছে।
‘কোলাভেরি’র বাজি ধরে নেওয়া যেতে পারে, মেরেই দিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপিই বা পিছিয়ে থাকে কী করে? ভোটের জন্য জুৎসই থিম-সং এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছে দল। কিন্তু প্রচারের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে বিজেপির তুরুপের তাস পথনাটিকা। উত্তরপ্রদেশের মহল্লায়-মহল্লায় দুটি নাট্যদল ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছে ভোট-ময়দানে। তাদের থিম ‘কাসভের ফাঁসি’। উত্তরপ্রদেশের ভোটে ‘কাসভ’ কেন? বিজেপি নেত্রী বাণী ত্রিপাঠী ধরিয়ে দিলেন, “কাসভ! মানে কংগ্রেস-সপা-বসপা।” পথনাটিকা দিয়ে বিজেপি আবার রাহুলেরই ‘ফানুস’ ফাটাতে চায়। নাটকের একটি বড় চরিত্রই রাহুল। আর তার শিরোনাম ‘পাপ্পু ফেল হো গ্যয়া। ‘পাপ্পু’ মানে রাহুল। রাহুল ফাঁপা প্রতিশ্রুতি দেন। রাহুল খাতা না দেখে ভাষণ দেন না। রাহুল উত্তরপ্রদেশের মানুষকে ভিন রাজ্যে ভিক্ষা করার কথা বলেন। এমন অনেক ব্যঙ্গ আর কটাক্ষে ভরা নাটক। দেহাতি ভাষায়, দেহাতি গানে দেহাতি মন টানার প্রয়াস। সব মিলিয়ে নাটকের নির্যাস, পাপ্পু (রাহুল) ফেল হো গ্যয়া। ফাঁকতালে মুলায়মের ‘গুন্ডাগিরি’ আর মায়াবতীর ‘দুর্নীতি’র প্রসঙ্গও আছে।
প্রশ্ন হল, ভোট-যুদ্ধে এই জাতীয় থিমের লড়াইয়ে আদৌ লাভ হয়?
বহুজাতিক বিজ্ঞাপন সংস্থার এক কর্তার কথায়, বিজ্ঞাপনে গান যে ভাবে কাজে দেয়, এক্ষেত্রেও সে রকমই। পরিচিত ও জনপ্রিয় গানের কথা বদলে দিয়ে প্রচারে ব্যবহার করলে, অনেকেই সচেতন বা অবচেতনে তা গুনগুন করে গেয়ে থাকেন। দু’তিনবার শোনার পর গানের কথাগুলি মনে গেঁথে যায়। গানের কথা যদি ভাল হয়, তা হলে তা মানুষের মন ছুঁয়েও যায়। পথনাটিকাতেও গানের সমাবেশ থাকে। অভিনয় থাকে। এই দুইয়ের মিশেল মানুষকে আকর্ষণ করে।
উত্তরপ্রদেশের প্রচারের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভির মতে, “আম-জনতার কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় গান বা পথনাটকের চেয়ে উৎকৃষ্ট মাধ্যম নেই। বড় বড় নেতাদের সভায় ভিড় করানোর জন্য লোককে হাতে পায়ে ধরে ডেকে আনতে হয়। আর এ ধরনের গান বা নাটক সরাসরি পৌঁছে যায় জনতার উঠোনে।” লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রার সময়েও তাঁর কন্যা প্রতিভা একটি ‘থিম সং’ তৈরি করেছিলেন। ‘অব বস’। প্রতিভার মতে, এই একটি গানেই যাত্রার সারমর্ম পুরে দেওয়া ছিল। দেশের দক্ষিণ হোক বা উত্তর-পূর্ব, গ্রাম হোক বা শহর, যাত্রা-মঞ্চে যেখানেই এই গান বাজানো হয়েছে, দু’হাত তুলে তাল মিলিয়েছেন নেতা থেকে আম-জনতা। অনেক কথা বলেও যা বোঝানো যায় না, একটি গান সেই বাজিমাত করেছে।
এ বার উত্তরপ্রদেশে সঙ্গীত-সংগ্রামে কারা জেতে, সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.