রাজ্যের কয়েক লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি বিক্রি না হওয়া সামগ্রী কিনে নিয়ে বিপণনের ব্যবস্থা করতে চায় রাজ্য সরকার। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শনিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কয়েক হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুধু ঋণ দিয়ে নয়, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে গেলে ওদের তৈরি সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থাও সরকারকে করতে হবে।”
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে যুক্ত থাকা যুবক-যুবতীদের ঋণ দেওয়ার অনুষ্ঠান ছিল এ দিন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্টেডিয়ামে ঢুকেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের উপচে পড়া ভিড় দেখে খুশি হন তিনি। তাঁদের শুভেচ্ছা জানাতে পুরো স্টেডিয়াম ঘোরেন মমতা।
পরে বলেন, “যাঁরা মাটির লোক, তাঁরাই আসল উদ্যোগপতি। সরকার ওঁদের বানানো পণ্য বিক্রির জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলা সদর এবং ব্লক সদরে বিপণন কেন্দ্র গড়ে দেবে। কেন্দ্রীয় ভাবে প্রথম কেন্দ্রটি হবে কলকাতায়।” কলকাতায় কেন্দ্র গড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিনই মহাকরণে বৈঠক করবেন বলে জানান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বড় বড় শিল্প একটা জায়গায় হয়। কিন্তু স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে গোটা রাজ্যে। আমরা চাই ওই মেয়েরা মাথা তুলে দাঁড়াক। আমরা তো অনেক শিল্পতালুক করছি। ওই সব তালুকের পাশে কিছুটা জায়গা বিপণন কেন্দ্রের জন্য রাখব।” মঞ্চে উপস্থিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওঁদের স্বনির্ভর করতে পরিকল্পনা তৈরি করুন।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্তদের প্রায় ৯০ শতাংশই মহিলা। তাঁরা সংসারের কাজও করেন। প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হয় তাঁদের। এঁদের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার আওতায় আনা হবে। ওই বিমায় বছরে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ পাওয়া যেতে পারে।” এ ব্যাপারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির নামে কার্ড বানানোর জন্য উদ্যোগী হতে দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এবং বিভাগীয় সচিবকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
দফতর সূত্রের খবর, প্রকল্পে মোট ঋণের ৭০% দিচ্ছে ব্যাঙ্ক, ১০% সংশ্লিষ্ট স্বনির্ভর গোষ্ঠী। বাকি অর্থ ভর্তুকি হিসাবে দেবে রাজ্য। চলতি আর্থিক বছরে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ১০২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয়। এ দিনও ঋণের প্রায় ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। |