চার দশক পরে, ফের বড়ো সাহিত্য সভার বার্ষিক অধিবেশন বসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। সাহিত্য সভার সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত মুশাহারি জানান, এ বার কেবল বাংলার বুকে সভা করেই তাঁরা ক্ষান্ত থাকবেন না। পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে বড়ো মাধ্যমে শিক্ষাদান ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়ো ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য জোরদার দাবি তোলা হবে।
১৯৫৪ ও ১৯৭০ সালে বড়ো সাহিত্য সভার অধিবেশন পশ্চিমবঙ্গে হয়েছিল। আগামী রবিবার থেকে জলপাইগুড়ির মাদারিহাটে বড়ো সাহিত্য সভার ৫১ তম বার্ষিক অধিবেশন শুরু হচ্ছে। চলবে তিন দিন। এ বারের অধিবেশনে অতিথি-অভ্যাগতদের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। সাহিত্য সভার কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রথম দু’দিন অন্তত ২০ হাজার ও তৃতীয় দিনে হাজার পঞ্চাশ মানুষ সমাবেশে আসবেন। সভার উদ্বোধন করবেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার। শেষদিনে আসবেন বড়োল্যান্ড স্বশাসিত পরিষদের প্রধান, হাগ্রামা মহিলারি। অসমের পরিবহনমন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম এবং শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও সম্মেলনে আসছেন। সভার দ্বিতীয় দিনে পশ্চিমবঙ্গে বড়ো মাধ্যমে শিক্ষার প্রচলন নিয়ে আলোচনাচক্র বসবে। সেখানে মূল বক্তা পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ-উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব ও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত মঙ্গল সিংহ হাজোয়ারি। সাহিত্য সভার তরফে রংসার সাহিত্য পুরস্কার পাবেন প্রেমানন্দ মুশাহারি, সামেশ্বর ব্রহ্ম সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন আরোণ রাজা ও সাঞ্জারাং লক্ষেশ্বর সংস্কৃতি পুরস্কার পাবেন পদ্মধর বসুমাতারি। মূল মঞ্চের পাশাপাশি চলবে বড়ো বইমেলা।
মুশাহারি জানান, তাঁদের হিসেব মতো উত্তরবঙ্গে ২ লক্ষ বড়োর বাস। তাঁদের দাবি, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং-এর বহু স্কুলে বাংলার পাশাপাশি বড়ো মাধ্যমেও শিক্ষাদান শুরু করা উচিত। অন্তত সরকারি স্কুলে অবিলম্বে বড়ো ভাষা পড়ানো হোক। বড়ো সাহিত্যসভার পশ্চিমবঙ্গ শাখা ইতিমধ্যেই যে সমীক্ষা করেছে, সেই অনুযায়ী জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং-এর অন্তত ৪০টি স্কুলে এখনই বড়ো ভাষা শিক্ষা শুরু করা যায়। সাহিত্য সভার কর্তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করতে চলেছেন। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কোকরাঝাড়ের বড়োল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়ো ভাষার পৃথক বিভাগ রয়েছে। ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে বড়ো ভাষা চালু হয়েছে। স্নাতকোত্তর স্তরের পাঠ্যক্রম আগামী দু’বছরের মধ্যে চালু হবে। শিলচরের অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলিতে বড়ো ঐচ্ছিক ভাষা। আসন্ন অধিবেশনে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও বড়ো ভাষা শিক্ষার দাবি তোলা হবে।
বিষয়টি নিয়ে তাঁরা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদারকেও একটি স্মারকলিপি দেবেন বলে কমলাকান্ত মুশাহারি জানান। তাঁর বক্তব্য, এতে দু’পক্ষই সমৃদ্ধ হবে। |