|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি ১... |
|
রুদ্রকে হয়তো বিয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে |
বললেন তনুশ্রী চক্রবর্তী। এখন তাঁর পাখির চোখ শুধুই কেরিয়ার-য়ে। পর পর অফার। মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায় |
পত্রিকা: স্ট্রাইকারে ছিলেন পাওলি আর পার্নো, সেখানে মিডফিল্ড থেকে এসে তো আপনি গোল করে দিলেন ‘বেডরুম’-য়ে...
তনুশ্রী: সত্যি বলতে কি গোল করলাম কিনা জানি না। কিন্তু আমার পারফরম্যান্স যে দর্শকের ভাল লেগেছে এটা জেনে আমি খুব খুশি।
পত্রিকা: তা শো-এর পরে পাওলি, পার্নো, কেউ ফোন করেছিল? অভিনেত্রীরা তো সাধারণত বন্ধু হন না। তাই জিজ্ঞেস করা....
তনুশ্রী: আগেকার দিনের অভিনেত্রীরা হয়তো বন্ধু হত না। এখন কিন্তু সবাই বন্ধু। পুরো সিনেমা বানানোটাই যে একটা টিম গেম। পাওলি, পার্নো দু’জনেই এসএমএস করেছিল আমার প্রশংসা করে। আমিও এসএমএস করেছিলাম ওদের। এবং কোনওটাই করতে হয় বলে করা নয়।
পত্রিকা: অভিনেত্রী তনুশ্রীর ব্যাকগ্রাউন্ড কী?
তনুশ্রী: কমলা গার্লস স্কুল থেকে পাশ করে বাসন্তী দেবী কলেজ থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করি। স্কুলের সময় থেকেই মডেলিংয়ের অফার পেতাম। বাড়িতে না জানিয়ে মডেলিং করি। তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে বিস্তর ঝামেলা হয়। কিন্তু আমি হলাম লিও। অসম্ভব জেদি। যা করব বলে একবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা আমি করবই। একটা কিলার ইন্সটিঙ্কট আছে আমার মধ্যে। যেটা আমাকে অনেক সময় খুব সাহায্য করে।
পত্রিকা:মডেলিং থেকে সিরিয়াল করে সিনেমায় আসেন। সিরিয়ালে আপনার অভিনয় নিয়ে সাংঘাতিক সমালোচনাও হয়েছিল...
তনুশ্রী: হয়েছিল তো....। সিরিয়ালে প্রথম প্রথম সাংঘাতিক খারাপ অভিনয় করতাম। যিশুদা’ (দাশগুপ্ত) আমাকে হাত ধরে অভিনয় শেখনোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও সমালোচনা কমেনি। আমার মাও আমার অভিনয়ের কঠিন সমালোচনা করতেন।
পত্রিকা: তার পর...
তনুশ্রী: তার পর এই অভিনয়কেই আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিলাম। সিনেমায় অভিনয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। নিয়মিত সিনেমা দেখা শুরু করলাম। বিখ্যাত পারফরমারদের কাজের কোন জায়গাটা ভাল লাগল, কোন জায়গাটা লাগল না--- সব নোট করে রাখতাম। বলা যায় এটা ছিল নিজের কাছে নিজের একটা চ্যালেঞ্জ। আজকে ‘উড়োচিঠি’র পর ‘বেডরুম’এ আমার অভিনয় যখন সবার ভাল লাগছে তখন একটা কারণেই সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে যে আমার কঠোর পরিশ্রম স্বীকৃতি পেল। ‘বেডরুম’ দেখার পর রাজদা’ (চক্রবতীর্র্), সৃজিত (মুখোপাধ্যায়), বীরসাদা’ (দাশগুপ্ত) সবাই বলেছে আমাকে নিয়ে তাঁরা
ছবি করতে ইচ্ছুক। এটা আমার কাছে বিরাট পাওয়া। কিন্তু আমাকে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। সবে তো শুরু করলাম। |
|
পত্রিকা: ‘উড়ো চিঠি’তে ড্রাগ অ্যাডিক্ট আর ‘বেডরুম’এ একজন বারবানিতা। দু’টো ছবিতে যেমন চরিত্রে কাজ করেছেন, তাতে কি মনে হয় ‘টাইপকাস্ট’ হয়ে যাচ্ছেন? একই রকমের ভূমিকায় পর পর কাজ...
তনুশ্রী: না, সেটা মনে হয় না। এই প্রশ্নটা যদি এই বছরের শেষে করেন দেখবেন টাইপকাস্ট হইনি একবারও।
পত্রিকা: আপনার প্রথম দু’টো ছবি কিন্তু মোটেই তথাকথিত বাণিজ্যিক বাংলা ছবি নয়। একটু অন্য রকম ছবি। আপনি কি এই রকম ছবিতেই শুধু কাজ করবেন? নাকি বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতেও কাজ করবেন?
তনুশ্রী: অবশ্যই আমি কমার্শিয়াল বাংলা ছবি করতে ইচ্ছুক। ভাল লাগবে কাজ করতে। এ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। খুব শিগ্গির হয়তো জানতে পারবেন।
পত্রিকা: তার মানে দেবের নায়িকা হতে চাইছেন আপনি?
তনুশ্রী: দেব হ্যান্ডসাম হিরো। নিশ্চয়ই সব নায়িকাই চাইবে দেবের সঙ্গে কাজ করতে। কিন্তু একটা জিনিস ভুলবেন না, ইন্ডাস্ট্রি যে দিকে এগোচ্ছে, দেবও কিন্তু খুব শিগগির আমাদের মতন ‘প্যারালাল’ ছবির হিরোইনদের হিরো হতে চাইবে। সুতরাং একটাই কথা। দেবের হিরোইন হতে আমি যতটা ইচ্ছুক, পার্নো, তনুশ্রীদের নায়ক হতে দেবও সমান ভাবে ইচ্ছুক হবে আর কিছু দিনের মধ্যে।
পত্রিকা: এটা বেশ ইন্টেলিজেন্ট উত্তর...
তনুশ্রী: ইন্টেলিজেন্ট না হলে তো অভিনেতা হওয়া যায় না। মানুষের খুঁটিনাটি লক্ষ করার সেই চোখটাই যদি না থাকে, আবেগগুলোকে নিজের ভেতরে ঢুকিয়ে নেবার শক্তিটাই যদি না থাকে, তা হলে কীসের অভিনেতা? এবং সেটা ইন্টেলিজেন্ট না হলে সম্ভব নয়।
পত্রিকা: ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই জানেন আপনি রুদ্রনীল ঘোষের গার্লফ্রেন্ড। অনেকে বলেন আপনাকে ছবিতে নিতে হলে চিত্রনাট্য রুদ্রনীল ঘোষকে দিয়ে পড়িয়ে নিতে হয়?
তনুশ্রী: একদম বাজে কথা। আমি কেরিয়ারের ব্যাপারে কারও কথা শুনি না। মা-বাবার কথাই শুনি না তো রুদ্রর কথা কী শুনব। এবং এটাও শুনুন! রুদ্রনীল ঘোষ আমার স্পেশাল ফ্রেন্ড.... কিন্তু আমি ওর গার্ল ফ্রেন্ড নই।
পত্রিকা: কথার মারপ্যাঁচ করবেন না প্লিজ। গার্লফ্রেন্ড না হলে রুদ্র যখন আই সি ইউতে ভর্তি ছিলেন, সারারাত জেগে বসে থাকতেন না....
তনুশ্রী: (হাসি) পরের প্রশ্নটা করবেন প্লিজ।
পত্রিকা: ইদানীং শোনা যাচ্ছে আপনাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। আপনার সঙ্গে পরমব্রতর প্রেমের খবরও হাওয়ায় উড়ছে?
তনুশ্রী: তাই নাকি? এটাও একেবারে বাজে কথা। কিন্তু একটা ব্যাপার ঠিক। তথাকথিত সুপুরুষেরা আমার পছন্দের নয়। রুদ্র বা পরম---যাদের সঙ্গে আমার নাম জড়িয়েছে তারাও কনভেনশনালি ভাল দেখতে ছেলে নয়। আমার কাছে সুপুরুষের চাইতে বুদ্ধিদীপ্ত পুরুষের আকর্ষণ বেশি। আর একটা ব্যাপার আমার পছন্দ। যে সব ছেলে নিজের কাজ নিয়ে খুব মগ্ন থাকে, আমাকে সময় দেওয়ার মতো সময়ও যাদের হাতে নেই, তাদের আমার বেশি পছন্দ। হয়তো শুনতে অদ্ভুত লাগবে। কিন্তু আমি এমনই।
পত্রিকা:আজকাল শোনা যাচ্ছে মুম্বই থেকেও আপনি কয়েকটা অফার পেয়েছেন?
তনুশ্রী: হ্যাঁ পেয়েছি। অনেকেই আমাকে ফোন করেছিল। তাদের মনে হয়েছে আমাকে দেখতে গড়পড়তা বাঙালি মেয়েদের মতো নয়। কিন্তু এখনও কিছুই পাকা হয়নি। হলে নিশ্চয়ই জানাব।
পত্রিকা: ‘বেডরুম’-এর পরে আর কী কী ছবি আপনার হাতে?
তনুশ্রী: সুব্রত সেনের ‘কয়েকটি মেয়ের গল্প’ করছি। অঞ্জন দাসের পরের ছবিটা করছি যেখানে আমার বিপরীতে রয়েছে পরম। মৈনাকের পরের ছবিটাতেও হয়তো রয়েছি। কমলেশদা’র (কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়) সঙ্গেও কথা চলছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটা অফার রয়েছে।
পত্রিকা: তা হলে রুদ্র যে সে দিন বলছিল এপ্রিল মাসে আপনারা বিয়ে করবেন....
তনুশ্রী: রুদ্র বলছিল নাকি?
পত্রিকা: হ্যাঁ, বলছিল।
তনুশ্রী: তা হলে একটা কথা বলব? ওকে হয়তো আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এই মুহূর্তে বিয়ের কথা মনের শেষ প্রান্তেও নেই। |
|
|
|
|
|