|
|
|
|
ক্ষুব্ধ জলসম্পদ দফতর |
গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
‘বিল বকেয়া’ থাকায় পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় জলসম্পদ দফতরের গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। ফলে সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জল তুলতে না পেরে মহা সমস্যায় পড়েছেন বোরো চাষিরা। এ দিকে, বিলের ৭০ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার পরেও বিদ্যুৎ দফতর কোনও কিছু না জানিয়ে তমলুক, কোলাঘাট ও মহিষাদল ব্লকের ৬টি গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলসম্পদ দফতরের আধিকারিকেরা। বিদ্যুৎ দফতরের অবশ্য বক্তব্য, রাজ্যস্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। পরে ফের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। দ্রুত বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হবে।
চাষে সেচের সুবিধার্থে জলসম্পদ দফতর বিভিন্ন এলাকায় চাষজমিতে গভীর নলকূপের মাধ্যমে জল উত্তোলন করে কৃষকদের সরবরাহ করে। ওই সব সরকারি গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ বিল কেন্দ্রীয় ভাবে জলসম্পদ দফতরে জমা দেয় রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, তমলুক, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, মহিষাদল, পটাশপুর প্রভৃতি ব্লকে ৮৮টি গভীর নলকূপ রয়েছে জলসম্পদ দফতরের। এ ছাড়া ‘রিভার লিফটিং ইরিগেশন’-এর (আরএলআই) ব্যবস্থা রয়েছে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। আরএলআইগুলি অবশ্য মূলত ডিজেল-ইঞ্জিন চালিত। জলসম্পদ দফতরের দাবি, বিদ্যুৎ বিলের ৭০ শতাংশ টাকা কয়েক মাস আগেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া টাকা বিদ্যুৎ বিল নিরীক্ষার পরে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ দফতরকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু না জানিয়েই আচমকা বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। জলসম্পদ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নির্বাহী বাস্তুকার বিশ্বজিৎ বেরার অভিযোগ, “বিদ্যুৎ বিলের সিংহভাগ টাকা মিটিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে আমাদের কিছু না জানিয়ে ৬টি ডিপ-টিউবওয়েলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। সমস্যায় পড়ে কৃষকেরা এখন দফতরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।”
এক-একটি গভীর নলকূপের উপরে নির্ভর করে ২০-৩০ হেক্টর জমির চাষ হয়। ফলে প্রায় কয়েকশো বিঘা জমির বোরো চাষ সঙ্কটে পড়েছে। সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি জলসম্পদ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়র বিদ্যুৎ দফতরে চিঠি পাঠিয়ে পুনরায় বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। যদিও এখনও বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ দফতরের জেলা আধিকারিকদের বক্তব্য, বকেয়া বিল আদায় করার জন্য রাজ্য জুড়েই অভিযান চলছে। জলসম্পদ দফতর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু ব্যক্তিগত মিনি ডিপ-টিউবওয়েলের মোটা অঙ্কের টাকা বকেয়া রয়েছে। চিঠি পাঠিয়েও কাজ না হওয়ায় তাদের বিদ্যুৎ-সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থার তমলুকের ডিভিসনাল ম্যানেজার শ্রীনিবাস রাউত বলেন, “রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের নির্দেশ মেনেই জলসম্পদ দফতরের কয়েকটি ডিপ-টিউবওয়েলের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। তবে, রাজ্য দফতর থেকে ফের বিদ্যুৎ-সংযোগ করে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। আমরা শীঘ্রই বিদ্যুৎ-সংযোগ দেব।” |
|
|
|
|
|