বাঁধের দাবিতে দিনভর ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানার মধুপুর মোড়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ চলে। অবরোধের জেরে নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা। দূরপাল্লার গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে একশো দিনের প্রকল্পে দ্রুত বাঁধের কাজ শুরুর আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কোচবিহার-২ ব্লকের বিডিও শৌভিক বসু বলেন, “বাসিন্দাদের উদ্বেগের বিষয়টি জানি। দ্রুত একশো দিনের প্রকল্পে বাঁধের কাজ শুরু করার চেষ্টা হচ্ছে।” ওই অবরোধের নেতৃত্বে ছিলেন সিপিএমের মধুপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক সুর্দশন দে, কংগ্রেসের কোচবিহার-২ ব্লক সহ সভাপতি শঙ্কর গুপ্ত-সহ অন্যান্যরা। দুজনেই দাবি করেন, এলাকার বাসিন্দা হিসাবে দলমত নির্বিশেষে গ্রামবাসীদের নিয়ে তৈরি নাগরিক মঞ্চের প্রতিনিধি হিসাবে তাঁরা ওই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে এদিনের আন্দোলন গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। যদিও এদিনের ওই অবরোধ আন্দোলনে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও স্থানীয় নেতা হাজির ছিলেন না বলে তাঁরা স্বীকার করেছেন। আন্দোলনে সামিল মধুপুরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তোর্সা নদীর খাত বদলানোয় মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। নদীর গ্রাসে ইতিমধ্যে প্রায় ৮০০ বিঘা আবাদি জমি ও শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা অনেকেই গ্রামের বিভিন্ন রাস্তার পাশে অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করে দিন কাটাচ্ছেন। সমস্যা মেটাতে মধুপুরের শালমারা থেকে হরিপুর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ তৈরি জরুরি হয়ে পড়েছে। নানা মহলে দরবার করার পরেও ওই ব্যাপারে কেউ গরজ দেখাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই অবরোধের কর্মসূচি নিতে হয়। সিপিএমের মধুপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক বলেন, “প্রশাসনের টনক নড়াতে ওই আন্দোলন করা হয়। তাতে দলমত নির্বিশেষে অন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে সামিল হয়েছি।” কংগ্রেস নেতা শঙ্কর গুপ্ত জানান, নাগরিক মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন হয়েছে। তিনি বলেন, “আন্দোলনে তৃণমূলের কেউ না-এলেও অন্য কয়েকটি দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরাও যোগ দিয়েছি।” কোচবিহার-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরিমল বর্মনের দাবি, ওই বাঁধের দাবিতে তাঁরা ইতিমধ্যেই আন্দোলন নেমেছেন। প্রশাসন বাঁধ তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগীও হয়েছে। তিনি বলেন, “তার পরেও মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে রাস্তা অবরোধ সমর্থন করা যায় না বলেই আমাদের কেউ তাতে যোগ দেননি। এদিনের ঘটনায় সিপিএম-কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠতা সামনে এসে গিয়েছে।” |