রাজ্য ভাওয়াইয়া উৎসবের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নাম ঘোষণার পরেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মাকে। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে। উৎসবের কার্যকরী কমিটিতে তৃণমূলের বিধায়ক, নেতারাই কেবল ঠাঁই পেয়েছেন বলেও অভিযোগ। জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘দলতন্ত্র’ কায়েম করার অভিযোগ আনা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “ভাওয়াইয়ার জগতে সুখবিলাস বর্মার নাম এতটাই উজ্জ্বল যে, এই ধরনের কোনও উৎসবে তাঁর নাম দলের নিরিখে বিবেচনা হওয়ার নয়।” তবে কোচবিহারের জেলা অনগ্রসর কল্যাণ আধিকারিক তথা উৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, “ও সব নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। ২১ জানুয়ারি উৎসব সফল করতে তৃতীয় দফার বৈঠক হবে।”
আগামী ৯-১২ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের ঘোক্সাডাঙা হাই স্কুল ময়দানে রাজ্য ভাওয়াইয়া উৎসবের আসর বসছে। এক দশকের এই উৎসবকে ঘিরে বরাবরই উৎসাহী সুখবিলাসবাবু। বামফ্রন্ট আমলে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত সুখলিবাসবাবুকে উৎসবের প্রস্তুতি কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হত। পরে তিনি কংগ্রেস যোগ দিলে আর ওই পদে রাখা হয়নি। এই নিয়ে এক সময়ে বামেদের বিরুদ্ধে দলতন্ত্রের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস-তৃণমূল উভয়েই। এ বার নয়া জমানায় তিনি মর্যাদা পাবেন বলে আশা করেছিলেন কংগ্রেস কর্মীদের পাশাপাশি জেলার সঙ্গীতশিল্পী মহলও। একাধিক ভাওয়াইয়া শিল্পীর বক্তব্য, সুখবিলাসবাবু এই উৎসব শুরু করার ক্ষেত্রে অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। নয়া সরকারের আমলেও তাঁকে উৎসব কমিটিতে রেখে পরে বাদ দেওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।
কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরীর বক্তব্য, “দলতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টায় সিপিএমকেও ছাপিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। সেই জন্যই ওখানে ভাওয়াইয়া নয়, তৃণমূলের উৎসব হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সুখবিলাসবাবুর সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।” জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস নেতা বিশ্বরঞ্জন সরকার জানান, সুখবিলাসবাবুকে ফের দায়িত্বে ফেরানোর ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। তবে সুখবিলাসবাবুর সঙ্গে এই দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “যাঁদের ভাওয়াইয়া সম্পর্কে ধ্যানধারণা নেই, তাঁরাই এই উৎসবকে তৃণমূলের উৎসব বলছেন।” তবে তাঁর বক্তব্য, “কমিটির পদাধিকারী বদল নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। সুখবিলাসবাবু শিল্পী হিসেবে নিশ্চয়ই থাকবেন।” তবে এই ব্যাপারে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি উৎসব আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান মাথাভাঙার তৃণমূল বিধায়ক বিনয় বর্মন। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “কেন, কী হয়েছে সে-সব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।” |