নিজস্ব সংবাদদাতা • ইন্দাস |
শিশুদের জন্মটিকা দেওয়ার জন্য মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে আসা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ইন্দাস ব্লকের ধামুরা গ্রামের বাসিন্দারা এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে কিছুক্ষণ আটকে রাখেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ দিন্দা বলেন, “বিএমওএইচকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কী ভাবে এবং কার গাফিলতিতে এমন কাজ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “ওই স্বাস্থ্যকর্মীর ভূমিকা সন্দেহজনক। দোষীকে চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসপুর পঞ্চায়েতের ধামুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দিন অনূর্ধ্ব দু’বছরের শিশুদের জন্মটিকা দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ শিবির করা হয়েছিল। চারিগ্রাম উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী মঞ্জু সরকার এ দিন ডিউটিতে ছিলেন। তাঁর কথায়, “ইন্দাস ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জন্মটিকা দেওয়ার জন্য ‘বিসিজি’ টিকা পাঠানো হয়েছিল। গিয়ে দেখি ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন টিকা নিতে আসা তিন শিশুর অভিভাবকে জানিয়ে তা দেওয়া বন্ধ রাখি।”
এটা জানার পরেই কয়েক জন বাসিন্দা সেখানে হাজির হন। ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে আটকে রাখেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় খাঁ বাসিন্দাদের বোঝানোয় মঞ্জুদেবী ছাড়া পান। গ্রামবাসী নয়ন শীল, তপন বাগদিরা বলেন, “মেয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল। তা আগে না দেখে ওই স্বাস্থ্যকর্মী এ দিন ওই টিকা নিয়ে আসেন। জানতে পেরে তাঁকে আটকে রেখেছিলাম।” তাঁদের ক্ষোভ, “মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ কী ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত রয়েছে? শিশুরা নিলে বড় রকমের বিপত্তি ঘটত। স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতায় এটা হয়েছে।” যদিও এই ঘটনার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীর দিকেই আঙুল তুলেছেন বিএমওএইচ রামেশ্বর ঘোষ। তিনি বলেন, “এ দিন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যে ওষুধ পাঠানো হয়েছিল তার মেয়াদ এ বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মী মঞ্জু সরকার যে ফাইলটি দেখাচ্ছেন সেটা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেওয়া হয়েছিল।”
রামেশ্বরবাবুর দাবি, “গত বছরের ২৬-২৮ ডিসেম্বর চারিগ্রাম উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডিউটি না করার জন্য ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। সেই আক্রোশে পুরনো ‘বিসিজি’ ইঞ্জেকশন নিয়ে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে ডেকে এই নাটক করছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে বিসিজি ইঞ্জেকশন পাঠানো হয়, তা ফেরত নেওয়া হয় না। সেটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে জমা থাকে। এ ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।” যদিও মঞ্জুদেবীর দাবি, “আমাকে বিসিজি-র যে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল সেটির মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমি কিছু করিনি। আমার কোনও দোষ নেই। তদন্ত হলে সব প্রমাণ হয়ে যাবে।” |