নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
দু’-তিন বছর ধরে লাইসেন্স রিনিউ না-করায় খড়্গপুর মহকুমায় সব মিলিয়ে ১৩টি নার্সিংহোমকে নোটিস ধরাল স্বাস্থ্য দফতর। সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমগুলি আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্কও করা হয়েছে। সময়ের মধ্যে নোটিসের জবাব না-এলে নার্সিংহোমগুলির লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “সময় মতো লাইসেন্স রিনিউ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গড়িমসি চলবে না। ইতিমধ্যেই জেলার নার্সিংহোমগুলি পরিদর্শন শুরু হয়েছে।” কিন্তু, এত দিন কেন সময়মতো এ কাজ হয়নি? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, “কর্মীর অভাবেই সময়মতো পরিদর্শন হয়নি। তবে, এ বার উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পরিদর্শন শেষে কোথায় কোথায় গাফিলতি রয়েছে, তা-ও কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মেয়াদ শেষের পরেও জরিমানা দিয়ে লাইসেন্স রিনিউ করা যায়। তাই, একাংশ নার্সিংহোম সময়ের মধ্যে লাইসেন্স রিনিউ করে না। গড়িমসি করে। আমরি-র অগ্নিকাণ্ডের পর স্বাস্থ্যকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। জেলার নার্সিংহোমগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, রোগীরা প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাচ্ছেন কি না, তাঁদের সুরক্ষার বিষয়েই বা কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, এ সব জানার জন্য তৎপর হয় স্বাস্থ্য দফতর। শুরু হয় পরিদর্শন। সম্প্রতি ধরা পড়ে, খড়্গপুর মহকুমার ১৩টি নার্সিংহোমের লাইসেন্স রিনিউ হয়নি।
যে ১৩টি নার্সিংহোম দু’-তিন বছর ধরে লাইসেন্স রিনিউ করেনি, তার মধ্যে বালিচকের ২টি, মালিগ্রামের ১টি, খাকুড়দার ১টি, মঠ বিষ্ণুপুরের ২টি, সবংয়ের ১টি ও খড়্গপুর শহরের ৬টি নার্সিংহোম রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, “এই ১৩টি নার্সিংহোমেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না তা দেখতে ফের পরিদর্শন হবে।”
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগেই খড়্গপুর শহরের ইন্দার একটি নার্সিংহোমে যান মহকুমাশাসক সুদত্ত চৌধুরি। সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে নোটিস পাঠিয়ে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, তা-ও রোগী ভর্তি চলছে। এর পরেই মালিককে গ্রেফতার করে ওই নার্সিংহোমটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। এমন ঘটনার নজির আগে বেশি নেই বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। জেলায় এখন ১৩৬টি নার্সিংহোম রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের আশ্বাস, “সমস্ত নার্সিংহোমই পরিদর্শন করা হবে। পরিদর্শনে গিয়ে গাফিলতি ধরা পড়লেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” খড়্গপুরের নার্সিংহোম মালিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মহকুমাশাসক। বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, সুরক্ষার দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। অবৈধ কাজ বরদাস্ত করা হবে না। |