|
|
|
|
ফাটলে জল বন্ধ বাঁ হাতি খালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালবাজার |
ক্যানেলে ফাটলের জন্য উদ্বোধনের দু’সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি খালের জল। গত ৮ জানুয়ারি গজলডোবার তিস্তা ব্যারাজ থেকে বাঁ হাতি ক্যানালের লকগেট খুলে জল ছাড়েন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুইয়া। দুই দশক পর খালের জল পেয়ে উৎসাহিত হন চাষিরা। তবে ক্যানেলের অবস্থা ভালভাবে পরীক্ষা না করেই কেন জল ছাড়া হল তা নিয়ে চাষিরা প্রশ্ন তুলেছেন। চাষিরা জানাচ্ছেন, প্রথমবার ১২ জানুয়ারি বাঁ হাতি ক্যানালে জল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর দুই দিন পর ফের জল ছাড়া হলেও আবার গত সোমবার থেকে জল ছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। উদ্বোধনের পর ক্যানেলে জলের পরিমাণ ছিল ১২ কিউমেক। তারপর কয়েকদিন বন্ধ রেখে আরও কমিয়ে পরিমাণ ৭ কিউমেক করা হয়। অন্যদিকে শিলিগুড়ি মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালে সবদিনই গড়পড়তা ৬০ কিউমেক জল থাকে। পুরোটাই লোক দেখানো ছাড়া কিছুই নয় বলে চাষিদের অভিযোগ। তিস্তা সেচ প্রকল্পের সুপারিনটেন্ডন্ট ইঞ্জিনিয়ার গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজাডাঙ্গা এলাকায় বাঁ হাতি ক্যানাল এবং তার শাখা ক্যানালের সামান্য কিছু এলাকাতে সিমেন্টের চাদর উঠে গিয়েছে। তাই আপাতত জল বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত সারাই করে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে ফের জল ছাড়া হবে।” বর্তমানে ফাটলের কথা বলা হলেও আগে এক দফায় জল কেন বন্ধ করা হয়েছিল তার অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি সেচ দফতরের আধিকারিকদের কাছে। দফতরের কয়েকজন বাস্তুকার জানিয়েছেন, কৃষকদের খেতে জল দেওয়ার জন্য শাখা ক্যানালের প্রয়োজন। তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। আর এই কাজ শেষ না করে মূল বাঁ হাতি ক্যানালে জল ছাড়া হলে নির্মীয়মান শাখা ক্যানালগুলি বেহাল হয়ে পড়বেই। এ ছাড়া শাখা ক্যানালগুলির দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের কমান্ড এরিয়া ডেভলপমেন্ট অথরিটি। তাই সেচ দফতর শাখা ক্যানেলগুলিকে নিয়ে বিশেষ মাথাব্যাথা দেখায় না। কমান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কোনও দফতর ডুয়ার্সে নেই। এতে আরও সেচ দফতরের সঙ্গে সমণ্বয়ের অভাব ঘটছে। লাটাগুড়ির কংগ্রেসের প্রধান গোবিন্দ দাস বলেন, “ফাটল তো কয়েকদিন আগে ধরা পড়েছে। ক্যানেলে তো উদ্বোধনের পর থেকেই ঠিকঠাক জল থাকছে না।” মৌলানির গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহাদেব রায় বলেন, “সাধারণ ক্যানালের ফাটল তো কয়েকদিনেই সারানো যায়। কিন্তু যে শাখা ক্যানেল থেকে কৃষকরা জল পাবেন, তা কেউ জানানো না।” এখনও পর্যন্ত মৌলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক দিনও জল যায়নি। অথচ মালবাজার মহকুমা মৌলানি চাষের ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, গজলডোবা এলাকার কয়েকজন চাষি জানান, গজলডোবা এলাকাতে মূল বাঁ হাতি ক্যানাল রয়েছে। কিন্তু ওই এলাকার চাষিদের জমিতে জল যাওয়ার জন্য কোনও শাখা ক্যানাল তৈরি হয়নি। চোখের সামনে জল থাকলেও খেতে তা নিয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। এলাকার ক্ষুদ্র চাষিরা আশা দাস বলেন, “বাঁ হাতি ক্যানালে জল উদ্বোধনের পর মাত্র কয়েকদিন জল ছিল। তাও খুবই সামান্য পরিমাণে। তবে আমাদের জল নেওয়ার তো কোনও শাখা ক্যানেলই নেই।” |
|
|
|
|
|