ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় রেল ও বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কলকাতা বিমানবন্দরে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। সকাল ৯টার পরে বিমান চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়। রেলে বিপর্যয় চলে আরও বেশি ক্ষণ। হাওড়া, শিয়ালদহ-সহ বেশ কয়েকটি শাখায় ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। দু’টি রাজধানী এক্সপ্রেস হাওড়া ও শিয়ালদহে পৌঁছয় সাত ঘণ্টা দেরিতে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, সকাল সওয়া ৫টা থেকে ঘন কুয়াশার দাপট চলে প্রায় চার ঘণ্টা। সকালে দৃশ্যমানতা কমে ৫০ মিটারের কাছাকাছি চলে যাওয়ায় বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ৩১টি দেশি ও বিদেশি বিমান ছাড়তে দেরি হয়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। এ দিন প্রথম বিমান নামে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে। সেটি দুবাই থেকে আসা এমিরেটসের বিমান। কলকাতা প্রথম বিমানটি ছাড়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে। সেটি কাতার এয়ারওয়েজের দোহাগামী বিমান।
এয়ার ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ জানান, কুয়াশার কারণে এ দিন সকালে তাঁদেরই প্রায় পাঁচটি বিমান ছাড়তে দেরি হয়। কলকাতা থেকে ওই সংস্থার প্রথম মুম্বইগামী বিমানটি ছাড়ে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে। বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ২৫ মিনিট দেরিতে সংস্থার বিমানটি পৌঁছয় কলকাতায়। |
কিন্তু আধুনিক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কুয়াশায় বারবার বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে কেন?
বিমানবন্দরের এক আধিকারিক জানান, কলকাতা বিমানবন্দরে ক্যাট-২-এর মতো আধুনিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে সমস্যা মিটছে না। কারণ ওই ব্যবস্থাতেও বিমান ওঠানামার জন্য ন্যূনতম ৩৫০ মিটার দৃশ্যমানতা প্রয়োজন। এ দিন দৃশ্যমানতা ছিল তার চেয়েও অনেক কম, মাত্র ৫০ মিটার। ফলে ওই ব্যবস্থা কাজে আসেনি। চলতি মরসুমে আগেও কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় ধরে বিমান বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। শুধু বিমানযাত্রীরা নয়, কুয়াশার জন্য নাজেহাল হন ট্রেনযাত্রীরাও। সকালে কুয়াশার জন্য পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া, শিয়ালদহ-সহ বেশ কয়েকটি শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। হাওড়া ও শিয়ালদহে দু’টি রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ বেশ কয়েকটি দূর পাল্লার ট্রেন নির্ধারিত সময়ের তুলনায় অনেক দেরিতে চলাচল করে। দিল্লি থেকে হাওড়া এবং শিয়ালদহে রাজধানী এক্সপ্রেস পৌঁছয় যথাক্রমে সাত এবং সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে। দুই শাখাতেই লোকাল ট্রেনগুলিও ভোর থেকে প্রায় বেলা ১১টা পর্যন্ত গড়ে আধ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করেছে। হাওড়া-হলদিয়া এবং খড়গপুর-ভুবনেশ্বর শাখাতেও লোকাল ও দূর পাল্লার ট্রেন বেলা পর্যন্ত গড়ে আধ ঘণ্টা দেরিতে চলে। |