চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে কয়েকশো বোতল দেশি-বিদেশি মদ উদ্ধার করল পুলিশ ও বসিরহাট মহকুমা আবগারি দফতর। হাড়োয়ার সোনাপুকুর, কাঁকড়া, বাদুড়িয়ার চাতরা, স্বরূপনগরের হটাৎগঞ্জ, কাটিয়াহাট, ঢালিপাড়া, হাসনাবাদের পমারি, হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর, যোগেশগঞ্জ, সন্দেশখালির ন্যাজাট, কালিনগর, কোড়াকাটি, দুখিরামপুর, মিনাখাঁ-সহ বসিরহাটের খোলাপোতা, চকফারাসাতপুরে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি চোলাইয়ের ভাটি। কয়েক হাজার লিটার চোলাই নষ্ট করা হয়েছে। নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে চোলাই তৈরির সরঞ্জাম। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। অবৈধ ভাবে মদ বিক্রির জন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মহকুমা আবগারি দফতরের ডেপুটি কালেক্টর সুজিত কুমার পাল বলেন, “বসিরহাটের চকফারাসাতপুরের (হুলোর মাঠ নামে পরিচিত) বিশ্বজিত মণ্ডল এবং কাকলি মণ্ডলের বাড়ি এবং শ্মশানঘাটের বুদো অধিকারি, দোদন সরকার, সমীর মোদকের দোকান থেকে ১৭২ লিটার চোলাই, ৩৭০ বোতল দেশি এবং কয়েকটি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। কমল পাত্র, গুরুপদ দাস নামের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।” |
বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযানকারী দলটি বসিরহাট শ্মশান এলাকায় যায়। সেখানে ইছামতী নদীর তীরে বুদো অধিকারীর ডেরায় চোলাইয়ের আসর বসেছিল। পুলিশকে আসতে দেখে কয়েকজন পালিয়ে যায়। ২ জন ধরা পড়ে। উদ্ধার হয় বেশ কয়েকশো লিটার চোলাইয়ের প্যাকেট। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নদীর ধারে একটি গোপন জায়গার কথা জানতে পারে। ওই জায়গাটির মালিক দোদন সরকার। সেখানে ঘরের তালা ভেঙে দেখা যায় ভিতরে রয়েছে প্রচুর দেশি-বিদেশি মদের বোতল। ঘরের এক কোনায় বোতলের ছিপির গাদা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, ওই ঘরে দেশি ও বিদেশি মদের বোতল খুলে ভেজাল মেশানোর কাজ হত। পাশের একটি ঘরেও প্রচুর দেশি বিদেশি মদের খালি বোতল পাওয়া যায়। সমীর মোদকের দোকানের তালা ভেঙেও পুলিশ প্রচুর দেশি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে বসিরহাট থানার আইসি অতনু মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশ চাঁপাপুকুর পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালায়। বিশ্বজিত মণ্ডল এবং কাকলি মণ্ডলের বাড়ির বাথরুম থেকে কয়েকশো লিটার চোলাই উদ্ধার হয়েছে। এখানে মহিলাদের একটা অংশ চোলাই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কল্পনা মণ্ডল, কাকলি মণ্ডলের কথায়, “বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা থাকলে চোলাই ব্যবসা ছেড়ে দিতাম। কেউ চায় না মদের ব্যবসা করে অশান্তি বাড়াতে।” বাসিন্দারা জানান, পুলিশের তাড়া খেয়ে ও সম্মানের কথা ভেবে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। চোলাইয়ের জন্য গ্রামের বদনামের জন্য অনেকেই এই গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিতে চায় না। পুলিশ জানিয়েছে, বসিরহাট স্টেশন এবং মাতৃসদন এলাকার বাসিন্দারা সেখানে চোলাইয়ের ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। শীঘ্রই ওই এলাকা-সহ মহকুমার অন্যত্রও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে আবগারি দফতর। |